কাঁদলেন এম এ সালাম

মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কাঁদছেন এম এ সালাম। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। প্রথম আলো
মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কাঁদছেন এম এ সালাম। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। প্রথম আলো

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির ৬ প্রার্থীসহ জামায়াতে ইসলামী, কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টির ২৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা তপন কুমার বিশ্বাসের কাছে তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এর আগে মঙ্গলবার জেলার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চার প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন দলের মোট ২৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তপন কুমার বিশ্বাস।

গতকাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন বাগেরহাট-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এম এ সালাম। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি। মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। প্রতিদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ রেইড দিচ্ছে। সরকারদলীয় লোকজন বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলছে, নেতা–কর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে। এই পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দুরূহ।’

এই আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিমও দলের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এম এ সালাম সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের আশাবাদ জানিয়ে বাগেরহাটের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট ও চিতলমারী) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও বর্তমান সাংসদ শেখ হেলাল উদ্দীন, বিএনপি থেকে দলের জেলা কমিটির উপদেষ্টা শেখ মুজিবর রহমান ও সহসভাপতি মাসুদ রানা, ইসলামী আন্দোলনের মো. লিয়াকত আলী শেখ, বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর ও কচুয়া) আসনে শেখ হেলালের ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বিএনপির এম এ সালাম ও এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম, সিপিবির সেকেন্দার আলী, ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল, বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ হাবিবুন নাহার, জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম, জামায়াতের আবদুল ওয়াদুদ, ইসলামী আন্দোলনের শাহজালাল সিরাজী, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ মোজাম্মেল হোসেন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপন, জামায়াতের আবদুল আলীম, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সোমনাথ দে, সিপিবির শরিফুজ্জামান শরিফ ও ইসলামী আন্দোলনের আবদুল মজিদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এ ছাড়া বাগেরহাট-১ আসনে জাতীয় পার্টির এস এম আল জোবায়ের, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এম ডি শামসুল হক, বাগেরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, জাকের পার্টির খান আরিফুর রহমান, স্বতস্ত্র প্রার্থী এস এম আজমল হেসেন ও রেজাউর রহমান মন্টু, বাগেরহাট-৩ আসনে জাকের পার্টির মো. রেজাউল শেখ, জাতীয় পার্টির মো. সেকেন্দার আলী মনি, বাগেরহাট-৪ আসনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনফ) মো. রিয়াদুল ইসলাম আফজাল ও ন্যাশনালস পিপলস পার্টির (এএনপি) মো. আমিনুল ইসলাম খান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বাগেরহাট-৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া জামায়াতের জেলা নায়েবে আমির আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ নেই। রামপাল, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলাসহ বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা–মামলা হচ্ছে। গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকালও মোরেলগঞ্জ থানার একটি গায়েবি মামলায় হাজির হয়ে আদালতে জামিন নিতে আসা ১৫ জন নেতা-কর্মীকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।