মহাজোটে নাসরিন জাহান ও মোহসীনকে নিয়ে জট

নাসরিন জাহান ও মো. মোহসীন
নাসরিন জাহান ও মো. মোহসীন

বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এখানে জাতীয় পার্টির (জাপা) বর্তমান সাংসদ নাসরিন জাহান রত্না এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের (ইনু) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মো. মোহসীন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। টানা তৃতীয়বার আসনটি ধরে রাখতে চাইছে জাপা। কিন্তু এবার ভাগ বসাতে মরিয়া মহাজোটের আরেক শরিক জাসদ।
এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ উদ্দীন মল্লিক। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে প্রথমে তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও জোটের কারণে তাঁকে শেষ পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে হয়। এবারও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
মো. মোহসীন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, জাসদ তাঁকে এখানে মনোনয়ন দিয়েছে। জাপা ছাড় দিতে রাজি না হলে এবং মহাজোট তাঁকে মনোনয়ন না দিলেও তিনি জাসদের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জাতীয় পার্টির স্থানীয় সূত্র জানায়, এই আসনে বর্তমান সাংসদ নাসরিন জাহান জাপার মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। আর রুহুল আমিন হাওলাদার জয়ী হন পটুয়াখালী-১ আসন থেকে। রুহুল আমিন হাওলাদার এবারও পটুয়াখালী-১ আসনে জাপা থেকে মহাজোটের মনোনয়ন চেয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ২০০৮ সালে রুহুল আমিন হাওলাদার বরিশাল-৫ আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ হয়েছিলেন।
বারবার মহাজোটের কাছে আসনটি ছাড় দেওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের কয়েকজন নেতা জানান, বাকেরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক থাকলেও জোটের কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সরকারি দল হয়েও এখানে আওয়ামী লীগের সাংসদ না থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা অভিভাবকহীন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাকেরগঞ্জ পৌর মেয়র লোকমান হোসেন ডাকুয়া বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ আছে, এটা ঠিক। কিন্তু দলের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে।’
বাকেরগঞ্জের তিনটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের অন্তত ছয়জন নেতা জানান, জাসদের প্রার্থী মো. মোহসীন দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় নানা উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রাখছেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশছেন। এ জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। তবে এতে ভিন্নমত জাপার নেতা-কর্মীদের। উপজেলা জাপার দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব মিত্র বলেন, এই আসনে স্বাধীনতার পর থেকে জাপার প্রার্থী ছয়বার জয়ী হয়েছেন। এখানে জাপার বিকল্প নেই। নাসরিন জাহানই মনোনয়ন পাবেন।
সাংসদ নাসরিন জাহান মুঠোফোনে বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেননি। জাসদের একজনসহ আরও বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জোটগত মনোনয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ২ ডিসেম্বর। এই আসনটি আমাদের ছিল। এবারও আমরাই পাব বলে আশা করি।’