নির্ভার আওয়ামী লীগ বিএনপিতে দোটানা

সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একজন হলেও বিএনপির দুজন। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ অনেকটাই নির্ভার। চূড়ান্ত প্রার্থী এখনো ঘোষণা না হওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা দোটানায় রয়েছেন। এ অবস্থায় তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
গত বুধবার আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইমরান আহমদ, সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মো. সামসুজ্জামান জামান, আহমেদ তাজ উদ্দিন তাজ রহমান (জাতীয় পার্টি), এম ইসমাইল আলী আশিক (জাপা), আতাউর রহমান (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম), মনোজ কুমার সেন (বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি) এবং মো. জিল্লুর রহমান (ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন)।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা জানান, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করায় এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর লড়াই হয়। এর বাইরে ১৯৯১ সাল থেকে এ আসনে প্রতিবারই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে আসছে। একবার আওয়ামী লীগ তো পরের বার বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ দুটি দলের প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। তবে প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভার থাকলেও বিএনপি দোলাচলে রয়েছে। মনোনয়নপত্র জমাদানকারী দুজনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কে প্রার্থী হচ্ছেন, এ নিয়ে এখনো তৃণমূলের কর্মীরা নিশ্চিত না হওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
এবার এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০১ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইমরান আহমদ বিজয়ী হয়েছিলেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ইমরান আহমদ বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির দিলাদার হোসেন সেলিম। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির দিলদার হোসেন সেলিম ও তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইমরান আহমদ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ আসনে দিলদার হোসেন সেলিম নানাভাবেই এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু এরপরও কেন্দ্র থেকে শেষ পর্যন্ত কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সেটা তৃণমূলের কর্মীরা ধারণা করতে পারছেন না। তাই সাধারণ মানুষের সঙ্গে দলটি নির্বাচনী যোগাযোগও এখন পর্যন্ত তৈরি করতে পারছে না। দ্রুত চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে সংকট ক্রমে ঘনীভূত হবে।
সাংসদ ইমরান আহমদ বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পুনরায় এলাকাবাসী আমাকে নির্বাচিত করবেন, এই বিশ্বাস ও আস্থা আমার রয়েছে। আমি সাধ্যমতো সব সময় মানুষের পাশে থেকেছি, কখনো মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকিনি। এটা বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই মানুষ আমাকে
মূল্যায়ন করবেন।’
দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, ‘সারা দেশেই বিএনপি নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে কিছু ব্যাকআপ প্রার্থী রেখেছে। এ আসনেও এমনটা হয়েছে। মূলত আমিই এখানে বিএনপি, তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী। এলাকার মানুষের সঙ্গে আমার দীর্ঘকালের সম্পর্ক। আমি কখনোই এলাকাবাসীকে ছেড়ে যাইনি। এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হবে। দলীয় নেতা-কর্মীরাও বিজয় পেতে উদ্‌গ্রীব হয়ে রয়েছেন। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমার পক্ষে কাজ করবেন।’