ইসির মনে এক, মুখে আরেক: মওদুদ

জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদসহ অন্যরা। ছবি: আবদুস সালাম
জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদসহ অন্যরা। ছবি: আবদুস সালাম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) মনে এক, মুখে আরেক কথা বলে। ইসির মুখের কোনো কথা বিশ্বাস না করার আহ্বান জানান তিনি।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় মওদুদ এসব কথা বলেন।

মওদুদের ভাষ্য, ইসি মুখে যত কথা বলুক না কেন, একটা কথাও বিশ্বাস করবেন না। তাদের মুখে এক কথা, মনের মধ্যে আরেক কথা। তারা জানে, তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। তাদের কোনো কথা পুলিশ বা প্রশাসন শোনে না।

বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বদলির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ইসিতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইসি এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন মওদুদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসি সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

সরকার ও ইসির কাছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না চেয়ে আন্দোলন করে তা আদায় করার কথা বলেন মওদুদ।

গত দুই দিনে বিএনপির তিনজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান মওদুদ। তাঁর ভাষ্য, সরকার জানে, মাঠপর্যায়ে তাদের ভোট নেই। তাই গ্রেপ্তার, মামলা চলছে। ধানের শীষের জোয়ার উঠেছে। এ জোয়ার কেউ থামাতে পারবে না।

ইসির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, মন্ত্রী ও সরকারদলীয় প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শেষ পরীক্ষা উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, এই পরীক্ষায় দেশের মানুষকে ভোটের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার অপসারণ করতে হবে।

আলোচনাসভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না দাবি করেন, দেশে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। তার সম্ভাবনাও নেই। ইসি সরকারের তল্পিবাহক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির কর্মীদের উদ্দেশে মান্না বলেন, ‘আপনারাও জিয়া, খালেদাকে নিয়ে ছবি বানান, গান বানান। গ্রামে গিয়ে তা প্রচার করেন।’

জামায়াতের ধানের শীষে নির্বাচন করা প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, অতীতের জন্য জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে হবে।

জাফরুল্লাহ বলেন, বিএনপিতে এবার অনেক মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে, যা বিএনপির প্রতি মানুষের সমর্থন প্রকাশ করে। অধিক প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের এই আস্থাকে মীমাংসা করা না গেলে সমস্যা তৈরি হবে।

আওয়ামী লীগের ২০ শতাংশ নতুন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে ভালো দিক উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, বিএনপিতে অনেক বেশি পুরোনোদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত প্রার্থী করার সময় বিএনপি বিষয়টি নিয়ে ভাববে বলে তাঁর আশা।

আদর্শ নাগরিক আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে এই আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাসহ প্রমুখ।