শাহজাহান মিয়া না রুহুল আমিন

পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি উপজেলা) আসনের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এখানে বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন দুবারের সাংসদ ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. শাহজাহান মিয়া। তিনি ওই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র দাখিলও করেছিলেন। কিন্তু মহাজোটে থাকায় আওয়ামী লীগ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলে সাংসদ হন রুহুল আমিন হাওলাদার।
এবারও আওয়ামী লীগ থেকে মো. শাহজাহান মিয়া মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। এ অবস্থায় এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে এক ধরনের জটিলতা দেখা দিয়েছে।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই এ আসনটি ছাড়তে নারাজ ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগেই এই আসনে নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবি উঠেছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে।
১৯৯৬ সালের ১২ জুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের ফলাফলে চতুর্থ হন জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদার। এরপর ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি।
১৯৯৬ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের শাহজাহান মিয়া। ২০০১ সালে বিএনপির আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ২০০৮ সালে শাহজাহান মিয়া পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মহাজোটে থাকায় আওয়ামী লীগ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। ওই নির্বাচনে সাংসদ হন রুহুল আমিন হাওলাদার। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহজাহান মিয়া তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।
এবার আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা–কর্মীরা এ আসনে দলের প্রার্থী চান। সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পুরো ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার ভোটারদের কাছে নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রতীকের পক্ষে ভোট চাওয়া যাবে না। ভোটাররাও এতে ক্ষুব্ধ হবেন, দলীয় সমর্থনও হারাতে হবে।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম শাহজাহান পারভেজ বলেন, ‘গত নির্বাচনে আসনটি ছেড়ে দিয়ে দলীয়ভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এবারও যদি আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে সংগঠন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। প্রধানমন্ত্রী এই এলাকার ব্যাপক উন্নয়নকাজ করছেন। আমাদের এই উন্নয়ন মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে হবে। এ কারণেই এই আসনটি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছি।’
রুহুল আমিন হাওলাদার ২৭ নভেম্বর প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। এখন মহাজোট যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।