সাংসদ ইয়াহইয়াকে ৭২ ঘণ্টা সময় দিলেন জাপার নেতারা

সিলেট-২ আসনে মহাজোট থেকে মনোনীত জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও এই আসনের বর্তমান সাংসদ ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সাংসদ ইয়াহইয়া চৌধুরী দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইয়াহইয়া চৌধুরী উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না করলে তাঁরা নির্বাচনে তাঁর পক্ষে কাজ করবেন না বলে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সভা আহ্বান করে স্থানীয় নেতারা তাঁকে সময়সীমা বেঁধে দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক। সিলেট জেলা শ্রমিক পার্টির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম রকিবের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বিশ্বনাথে জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গসংগঠন এখন অনেক বেশি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত। উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

বক্তারা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সাংসদ এহিয়া চৌধুরী আবারও মহাজোটের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় জাতীয় পার্টির কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। বক্তারা ইয়াহইয়া চৌধুরীকে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেন, এই সময়ের মধ্যে তিনি (ইয়াহইয়া চৌধুরী) উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ না করলে উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হবেন।

ইয়াহইয়া চৌধুরী ২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

ওই সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা জাপার সাবেক সভাপতি ইলিয়াস আলী, জেলা জাপার সদস্য ও বিশ্বনাথ উপজেলা জাপার সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক এম এ রব, উপজেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন, সদস্য আলম খান, উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন জাপার সভাপতি তোতা মিয়া, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল মিয়া, দৌলতপুর ইউনিয়ন জাপার সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম আলী, রামপাশা ইউনিয়ন জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সদস্য শাহ আলা উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি আবদুল মতিন, উপজেলা শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক জমির আলী প্রমুখ।

উপজেলার নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের বিষয়ে সাংসদ ইয়াহইয়া চৌধুরীর বক্তব্য জানতে গতকাল শনিবার বিকেলে তাঁর মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি। উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন প্রথম আলোকে বলেন, ইয়াহইয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট থেকে মনোনীত হয়ে জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা তাঁর পক্ষে প্রচারণাসহ বিভিন্ন সভায় নিরলস শ্রম দেন। নেতা-কর্মীদের প্রচেষ্টাতেই তিনি নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মহাজোটের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। তবে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় উপজেলা জাতীয় পার্টির কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। যে কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তিনি বলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তিনি উপজেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না করলে তাঁর পক্ষে কোনো নেতা-কর্মী কাজ করবেন না। একই সঙ্গে দলীয় হাইকমান্ডকেও বিষয়টি অবহিত করা হবে।