বিএনপির 'হেভিওয়েট' প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ফরিদুল কবির
ফরিদুল কবির

জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে বিএনপির একক প্রার্থী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদুল কবির তালুকদার ওরফে শামীমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। গতকাল রোববার এই মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়।

ফরিদুল কবির তালুকদার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে এখনো বহাল থাকায় এবং তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ না হওয়ায় মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। তবে সব নিয়ম মেনেই যথা সময় উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন মো. ফরিদুল কবির তালুকদার।

জামালপুর-৪ আসনে একক প্রার্থী হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন পান ফরিদুল কবির তালুকদার। তিনি গত ২৮ নভেম্বর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। গতকাল ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। জামালপুরের পাঁচটি আসনের মনোনয়নপত্র সকাল থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের কার্যালয়ের হল–কক্ষে যাচাই-বাছাই শুরু হয়। যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সরিষাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এখনো বহাল থাকায় এবং তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মো. ফরিদুল কবির তালুকদারের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ২৭ নভেম্বর মো. ফরিদুল কবির তালুকদার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ ছাড়া তিনি গত ২৮ নভেম্বর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলামের কার্যালয়ে সরকারি গাড়ি জমা দেন। এরপর তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র বাতিলের পুরো বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক। এ আসনে তিনি একক প্রার্থী এবং এখানে মো. ফরিদুল কবির তালুকদারের বিজয় প্রায় নিশ্চিত ছিল। ক্ষমতাসীনেরা এটা বুঝেই, শুধু ষড়যন্ত্র করেই তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে।’

ইউএনও সাইফুল ইসলাম গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকারি গাড়িটি জমা দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ৩০ নভেম্বর তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে পতদ্যাগ করার একটি কপি আমাকে দিয়েছেন।’

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সব নিয়ম অনুযায়ী যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। জেলার ৫টি আসনে আটজন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’ মো. ফরিদুল কবীরের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এখনো বহাল রয়েছেন। সরকারি লাভজনক পদে থাকায় তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।’ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি।

মনোনয়নপত্র বাতিলের পর এক প্রতিক্রিয়ায় মো. ফরিদুল কবির তালুকদার বলেন, ‘শুধু রাজনৈতিক ইশারায় এটা করা হয়েছে। সব নিয়ম অনুযায়ী আমি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। এখানে বিএনপি তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ ফোরাম পর্যন্ত সুসংগঠিত। ফলে এই সরকারের আমলেই ২০১৪ সালে আমাকে এ আসনের মানুষ ভোট দিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বানায়। সাংসদ হিসেবেও আমার বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত ছিল বলেই প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে গতকাল আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করিয়েছে।’ মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে তিনি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করবেন।