হোলি আর্টিজানে হামলার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

হোলি আর্টিজানে হামলার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এই মামলায় আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই ) রিপন কুমার দাস সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষ যে ১১১ জন সাক্ষীর কথা উল্লেখ করেছে, রিপন এর মধ্যে প্রথম।

গত ২৬ নভেম্বর হোলি আর্টিজানে হামলার মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিরা হলেন রাজীব গান্ধী, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন। এঁদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন পলাতক। অন্য ছয়জন আসামিকে আজ আদালতে হাজির করা হয়।

রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ও রাকিবুল হাসান রিগ্যানের পক্ষে আইনজীবী মো. ফারুক আহমেদ মামলা লড়ছেন। রাষ্ট্রপক্ষে কৌঁসুলি ছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বাকি ছয় আসামির পক্ষে রাষ্ট্র আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আজ প্রথম দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। কাল মঙ্গলবার আবার আদালত বসবেন।

হোলি আর্টিজানে হামলার মামলার আসামিদের আজ আদালতে হাজির করা হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
হোলি আর্টিজানে হামলার মামলার আসামিদের আজ আদালতে হাজির করা হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ জেরায় বেশ কিছু অসংগতির কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সাক্ষী এজাহার দেখে দেখে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি এটা করতে পারেন না। আসামিপক্ষের আইনজীবী মনে করেন, অভিযোগগুলো সাজানো।

প্রথম দিনে আদালতে আলামতও উপস্থাপন করা হয়। হোলি আর্টিজানে হামলার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও হোলি আর্টিজানের ভেতরে পাওয়া বিভিন্ন কাপড়চোপড় আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আজ রাকিবুল ও রাশেদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

২৩ জুলাই আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। হোলি আর্টিজান হামলার এ ঘটনায় ২১ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, যাঁদের মধ্যে পাঁচজন ওই দিন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আটজন পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হন। এ ছাড়া ওই ঘটনায় ৭৫টি আলামত পাওয়া গেছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজানে জঙ্গিরা হামলা চালায়। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। ওই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়। পরে পুলিশ ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একজন রেস্তোরাঁকর্মী।