৫ বছরে বিপুল সম্পদ রুহুলের

রুহুল আমিন
রুহুল আমিন

গত পাঁচ বছরে রুহুল আমিন হাওলাদার বিপুল পরিমাণ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদের বিস্তার ঘটিয়েছেন। ২০১৪ সালের হলফনামায় তিনি সম্পদের যে হিসাব দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে এবারের হলফনামার ব্যবধান বিপুল। তিনি জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাংসদ।

গত নির্বাচনের পর বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে রুহুল আমিন হাওলাদার ঋণই নিয়েছেন প্রায় ১৯০ কোটি টাকা। গত সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর ঋণ ছিল মাত্র ৭ কোটি টাকা। পটুয়াখালী-১ আসন থেকে তিনি এবার মনোনয়নপত্র জমা দিলেও ঋণখেলাপির কারণে গতকাল তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গতবারের হলফনামায় রুহুল আমিন হাওলাদারের পরিবারের ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি ছিল দুটি। গত পাঁচ বছরে তাঁর আরও চারটি (মোট ছয়টি) ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি হয়েছে। দুটি তাঁর স্ত্রীর এবং চারটি নিজের।
এবারের হলফনামা অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে তাঁর বাড়ি-দোকান ভাড়া থেকে আয় বেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। সাংসদ হিসেবে পারিতোষিক বেড়েছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকের আমানত থেকে নতুন আয়
হয়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এই সময়ে তিনি নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেতে শুরু করেছেন। এই বাবদ তাঁর আয় বেড়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আগের হলফনামায় তাঁর কোনো কৃষিজমির উল্লেখ ছিল না। এবার নিজের নামে ১ একর ৩৩ শতাংশ এবং স্ত্রীর নামে ১ একর ৬৫ শতাংশ জমির উল্লেখ করেছেন।

গতবারের হলফনামায় রুহুল আমিন হাওলাদার নগদ টাকা দেখিয়েছিলেন ৬ কোটি ৬৬ লাখের কিছু বেশি। এবার তা প্রায় দ্বিগুণ—১২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। গতবার তাঁর কোনো এফডিআর ছিল না। এবার আছে ৫ কোটি টাকার। গতবার তিনি দায় দেখিয়েছিলেন প্রায় ২৯ কোটি টাকা। এবার তাঁর তেমন কোনো দায় নেই। বরং গতবার যে পরিমাণ টাকা ঋণ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন, এবার ঋণ দেওয়ার পরিমাণ তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
গতবারের হলফনামা অনুযায়ী, স্ত্রীসহ অন্যদের মোট ঋণ দিয়েছিলেন ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এবারের হলফনামায় তা ১০ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্নাকে।

রুহুল আমিন হাওলাদারের অন্যান্য সম্পদ মোটামুটি গতবারের মতোই আছে। যেমন, নিজের নামে গুলশানে ১২ দশমিক ৭ কাঠা অকৃষিজমি। স্ত্রীর নামে পূর্বাচলে সাড়ে ৭ কাঠা জমি ও বাকেরগঞ্জে বসতভিটা। গুলশান ও বাকেরগঞ্জে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন দুটি। ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার। নিজের নামে ৭ কোটি ৭০ লাখ ও স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার–বন্ড প্রভৃতি। একটি ৯ এমএম পিস্তল, একটি ২২ বোর রাইফেল, একটি দোনলা বন্দুক, একটি ৩২ বোর রিভলবার ও একটি শটগান।

তবে সম্পদের বিস্তার যতই ঘটান না কেন, রুহুল আমিন হাওলাদারের নামে দুর্নীতির মামলা গতবারের মতো এবারও তিনটিই চলমান আছে। এর মধ্যে দুটি ঢাকায়, একটি পটুয়াখালীতে। পটুয়াখালীর বিশেষ জজ আদালতের মামলাটি সম্পর্কে এবারের হলফনামায় বলেছেন, ‘জাতীয় কমিটির ১৭তম সভায় প্রত্যাহৃত, কোর্টে চলমান’।