৪০ বছর পর নির্বাচনে নেই সাকা পরিবার

গিয়াস কাদের চৌধুরী, সামির কাদের চৌধুরী
গিয়াস কাদের চৌধুরী, সামির কাদের চৌধুরী

প্রায় ৪০ বছর পর সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পরিবারের কোনো সদস্য সংসদ নির্বাচনে থাকছেন না। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সাকা চৌধুরীর ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী (গিকা) এবং তাঁর ছেলে সামির কাদের চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও গতকাল তা বাতিল হয়েছে।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) ও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তিনি দলীয় মনোনয়নপত্রের চিঠি জমা দিতে পারেননি। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণখেলাপি। তাই তাঁর মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁর ছেলে সামির কাদের একই দলের হয়ে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তিনিও ঋণখেলাপির জন্য প্রার্থিতার বৈধতা পাননি।
বাবা-ছেলের হয়ে তাঁদের আইনজীবীরা বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা সেগুলো আমলে নেননি। তিন আসনে এখনো বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রয়েছেন। চট্টগ্রাম-৬ আসনে বিএনপির বর্তমান প্রার্থী উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য জসিম উদ্দিন সিকদার ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ’৭৯ সালের পর এই প্রথম পরিবারতন্ত্রের বাইরে বিএনপির প্রার্থী পেতে যাচ্ছে রাউজান। এতে দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। দলের মধ্যে প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতির প্রসার ঘটবে।

’৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের সময় রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে সাকা চৌধুরী প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে রাউজান আসন ছেড়ে দিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন কাদেরকে। কিন্তু গিয়াস উদ্দিন উপনির্বাচনে জিততে পারেননি। এরপর ’৮৬ সালে সাকা চৌধুরী জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচন করেন। সেবার তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর ’৯১ সালে এনডিপি থেকে ও ’৯৬ সালে বিএনপি থেকে সাকা চৌধুরী পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন।

’৯৬ সালে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির হয়ে রাউজান থেকে সাংসদ হন। ২০০১ ও ২০০৮ সালে তিনি একই আসনে চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর কাছে হেরে যান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। তাই তাঁদের পরিবারের কেউও নির্বাচন করেননি। এর পরের বছর ২২ নভেম্বর সাকা চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়। স্বাধীনতার আগে সাকা চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী গণপরিষদের সদস্য ছিলেন।