'ভোটের মজা আর থাকিল না'

‘হামার এলাকাত ভোটের মজা আর থাকিল না। বিএনপির প্রার্থী দুইজনে বাতিল হয়া গেল। ভোটারের আর দাম থাকিল না। ভোট চাওয়ার জন্যে হামারগুলার দাম থাকিল হয়, সেটাও আর হইল না।’ একধরনের আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বললেন রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনের ভোটার কৃষক লিয়াকত আলী (৫২)।

শুধু লিয়াকত নয়, এমন ভাষ্য প্রায় অধিকাংশ মানুষের। সেখানকার ভোটের আনন্দ যেন নিরানন্দ হয়ে গেল। গতকাল সোমবার সকালে মিঠাপুকুরের হাটবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গেলে ভোটাররা এমনই অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন।

রংপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির দুইজন প্রার্থী। এই দুইজনের মধ্যে একজন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতেন। কিন্তু দুইজনের মনোনয়নপত্র যাছাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়ে যায়। তাঁরা হলেন সাবেক সাংসদ শাহ সোলায়মান আলম ফকির ও মমতাজ হোসেন। বাতিল হওয়ায় এই আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকল না।

গতকাল সকালে রংপুর শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট গেলে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের খবর মুখে মুখে ফেরে।

জায়গীরহাটের বাসিন্দা মুদি দোকানি আজাহার আলী বলেন, কে কাকে ভোট দেবেন, সেটা পরের ব্যাপার। তবে এবার মিঠাপুকুরে ভোটের মজা থাকল না। জায়গীরহাটের পাশে চূহর এলাকার বাসিন্দা কৃষক ওয়ালিয়ার রহমান বলেন, ‘এই ভোটোত হামারগুলার দাম নাই। কেননা, হাটবাজারের চায়ের দোকানগুলাও খুব একটা চইলবার নয়। বিএনপির প্রার্থী না থাকলে কেমন করিয়া জমে?’

পায়রাবন্দ ইউনিয়নের খোর্দ মুরাদপুর গ্রামের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিঠাপুকুরে এত দিন জনগণের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল, তা মুহূর্তে নিভে গেল। ভোটের বাজার মন্দা।

এ আসনে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে বিএনপির দুজনসহ চারজন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়নপত্রে ত্রুটি থাকায় তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় বলে জানান জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এনামুল হাবীব।

এ আসনে এখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানসহ আরও পাঁচজন প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন মোফাখখারুল ইসলাম (নাগরিক ঐক্য), মমিনুল ইসলাম (বাসদ), এস এম ফখর উজ জামান জাহাঙ্গীর (জাতীয় পার্টি), শামীম মিয়া (জাকের পার্টি), শফিকুল ইসলাম (ইসলামী আন্দোলন)।