বিএনপি এখন নাটক করছে: হাছান

হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি
হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

বিএনপি জেনেশুনে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, ঋণখেলাপি ও বিলখেলাপিদের মনোনয়ন দিয়ে এখন নাটক করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজি পুকুরপাড় এলাকায় নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ আজ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেওয়ার আগে নির্দিষ্ট ফরমে প্রত্যেকের মামলা এবং ঋণ-বিলসংক্রান্ত তথ্যাবলি নিয়েছে। বিএনপি তা করেনি।’

হাছান মাহমুদের অভিযোগ, রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, টার্গেট করে নাকি বিএনপির ৫০ জন নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রও নাকি টার্গেট করে বাতিল করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জন্য যখন বিএনপির মহাসচিব মনোনয়ন ফরম নিয়েছিলেন, তখন কান্না করে বলেছিলেন, এবার প্রথম খালেদা জিয়াকে ছাড়া সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী দুই বছর কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত হলে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষিত হন। সুতরাং এই কথা তাঁরা জানতেন যে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন কখনো কোনো অবস্থাতে বৈধ হবে না। এ ছাড়া তাঁরা আরও বহু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাঁরা ঋণখেলাপি, বিলখেলাপিদের মনোনয়ন দিয়েছেন।’

চট্টগ্রাম অঞ্চলেও অনেক ঋণখেলাপি, বিলখেলাপিকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। মনোনয়ন ফরম বিতরণ করার সময় এই বিষয়ে দলটি সতর্ক ছিল জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তাঁরা জানতেন তাঁদের অনেকের মনোনয়ন টিকবে না। এ জন্য তাঁরা একটি আসনের বিপরীতে কয়েকজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। ৮০০ জনকে মনোনয়ন দেওয়ার কারণে তাঁদের প্রায় ১০০ জনের ওপরে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে এবং সুনির্দিষ্ট কারণে তা বাতিল হয়েছে। কারণ, তাঁদের কেউ কেউ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, কেউ ঋণখেলাপি, কেউ বিলখেলাপি।

দুই বছর দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ নির্বাচন করতে পারবে না, এটা সংবিধানের মধ্যে উল্লেখ আছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এই সংবিধান তো আওয়ামী লীগ রচনা করেনি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তখন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এই সংবিধান রচিত হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এই সংবিধান রচিত হয়েছে। অর্থাৎ তাঁরা এই মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি নাটক করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের ইতিহাসে গত ৪৭ বছরে কোনো দল ৩০০ আসনে ৮০০ জনকে মনোনয়ন দেয়নি। তাঁরা এই কারণে দিয়েছিল, তাঁরা জানতেন যে তাঁদের অনেকের মনোনয়ন টিকবে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করেছে। দলের মনোনয়ন ফরম যখন বিক্রি করা হয়, তখন এসব তথ্য চাওয়া হয়। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কারও মামলা আছে কি না, ঋণখেলাপি কি না, বিলখেলাপি কি না—এসব আমাদের মনোনয়ন ফরমেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল। আমাদের খসড়া প্রার্থী তালিকা করার আগেই মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সিবিআই রিপোর্ট দলের পক্ষ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি এগুলোর তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে ঋণখেলাপি, বিলখেলাপি ও দণ্ডিত আসামিদের মনোনয়ন দিয়েছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারা করেছে নাটকের অবতারণা করার জন্য।’