মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষোভ

>

মিজানুল হক, মো. আম্মান খান
মিজানুল হক, মো. আম্মান খান

এই আসন ছাড়াও জেলার সব আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-বঞ্চিত হয়ে দলের দুবারের সাবেক সাংসদ মিজানুল হকসহ অন্তত তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু গত রোববার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে স্বতন্ত্র ওই তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এতে ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের ভোট ভাগাভাগির শঙ্কা অনেকটা উড়ে গেল বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে এই আসন ছাড়াও জেলার সব আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের ছয়টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনটি ব্যতিক্রম। অন্য পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিলেও এই আসনটি মহাজোটের প্রার্থীর জন্য এবারও ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এটা মানতে পারেননি এখানকার আওয়ামী লীগের নেতারাসহ সমর্থকেরা। তাই তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে নৌকা মার্কার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ মিছিলসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করছিলেন। এরপরও শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্তে এবারও এই আসনটি মহাজোট প্রার্থীর জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোটের কারণে আসনটিতে মহাজোটের প্রার্থী মুজিবুল হক লাঙ্গল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। তবে মিজানুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের একটা অংশ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন বলে দলীয় তিনজন নেতা জানিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন-বঞ্চিত আওয়ামী লীগের দুই নেতা মো. আম্মান খান ও খন্দকার মো. মনিরুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। ফলে অনেকটাই বিপাকে পড়েন মহাজোটের প্রার্থী মুজিবুল হক।

মিজানুলের মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ উল্লেখ করা হয়, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তাঁর মনোনয়নপত্রের একটি জায়গায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন উল্লেখ করেছেন। তবে মিজানুল হক বলেন, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে রোববার বাছাইয়ের সময় তাঁর যুক্তিতর্ক হয়।’ তিনি আরও বলেন, তিনি তাঁর প্রার্থিতা বৈধতার জন্য গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর আপিল করেছেন। যদি তাঁর প্রার্থিতা বৈধ না হয়, তাহলে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন।  

একই আসনে অন্য দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর ঠিকমতো জমা দেওয়া হয়নি বলে তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এদিকে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিসুজ্জামান খোকন ও কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আয়ুব হোসেনের হলফনামায় ঠিকমতো স্বাক্ষর না থাকায় তাঁদেরও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।