অরিত্রীকে 'হত্যা'র বিচারের দাবিতে আজও বিক্ষোভ

রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম
রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীকে ‘হত্যা’র বিচারের দাবিতে আজ বুধবার সকাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেইলি রোড শাখার প্রধান ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেছে কয়েক শ শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অনেক অভিভাবক।

গতকাল মঙ্গলবারও স্কুলের এ শাখায় দিনভর আন্দোলন করে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। সেখান থেকে আজকের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ’ স্লোগানে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের হাতে রয়েছে ‘অরিত্রী হত্যার বিচার চাই’, ‘নো মোর সুইসাইড’, ‘অল সুইসাইড ইজ নট সুইসাইড’, ‘ভুল করি বলে আমরা শিক্ষার্থী, শুধরে দেবেন বলে তাঁরা শিক্ষক’, ‘অরিত্রীর বদলে যদি আপনার সন্তানের সঙ্গে এমন হতো?’ ‘নকলের শাস্তি টিসি হতে পারে না’—এমন প্ল্যাকার্ড।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে।

রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম
রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম

এদিকে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়েছে। প্রথমত, শিক্ষার্থীদের ছোটখাটো ভুলের জন্য অভিভাবকদের হয়রানি বন্ধ করা, দ্বিতীয়ত শিক্ষার্থীদের শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট প্রদত্ত ঐতিহাসিক রায় বাস্তবায়ন এবং তৃতীয়ত শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনা প্রয়োগ। এ ছাড়া সরকারের কাছে অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাদানকারীদের প্রচলিত দণ্ডবিধি ৩০৫ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান অভিভাবকেরা ।

এদিকে গতকাল মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অধ্যক্ষ-শিক্ষকসহ তিনজনকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করেছেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী। তাঁরা হলেন কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখাপ্রধান জিনাত আখতার ও শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা।

রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম
রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আবদুস সালাম

অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারীর অভিযোগ, রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পান। মোবাইলে নকল করেছে, এমন অভিযোগে অরিত্রীকে সোমবার তার মা-বাবাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সোমবার স্কুলে গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের অপমান করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে দেওয়া ছাড়পত্র) নিয়ে যেতে বলেন। প্রিন্সিপালের কক্ষে গেলে তিনিও একই রকম আচরণ করেন। এ সময় অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে বাসায় গিয়ে তিনি দেখেন, অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে।

অরিত্রীদের শান্তিনগরের বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসকেরা অরিত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।