কার ভাগ্যে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন

>

তিন প্রার্থীই এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তিনজন দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে আশাবাদী।

.
.

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বিএনপির তিন প্রার্থীর মধ্যে কে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানান জল্পনাকল্পনা চলছে।

ওই তিন প্রার্থী হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

তিন প্রার্থীই এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। তিনজন দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মনে করেন, এ আসনে অভিজ্ঞ, আন্দোলন–সংগ্রামে সক্রিয় ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থীকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন দলের শীর্ষ নেতারা।

এ আসনে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থী আবদুল মতিন চৌধুরী বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান। ২০১৪ সালে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকে হারিয়ে বিজয়ী হন গোলাম দস্তগীর।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যখন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন, তখন কাজী মনিরুজ্জামান জাগো যুবদলের যুবফ্রন্টের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি জাতীয়তাবাদী যুবদলের প্রথম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, তিনি বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে আছেন। রাজনৈতিক কারণে বহু মামলার আসামি হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের যেকোনো বিপদে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সংকট মোকাবিলায় কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে করেছি। বিগত ১০ বছরে রূপগঞ্জের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ সময় মামলা থেকে দলের নেতা-কর্মীদের মুক্ত করার জন্য নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে তাঁদের সঙ্গে থেকেছি। তাঁদের জামিনের দায়িত্ব নিয়েছে। এসব রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছি। তাই আগামী নির্বাচনে দল আমাকেই চূড়ান্তভাবে মনোনীত করবে বলে বিশ্বাস।’

অন্যদিকে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার। তাঁর আদি বাড়ি রূপগঞ্জের রূপসী। তিনি মনে করেন, এ আসনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে তিনি এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘রূপগঞ্জে আমার আদি নিবাস। দীর্ঘদিন এলাকায় মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে রয়েছেন। দল যদি মনে করে, জেল খাটা ও পুলিশের হাতে নিগৃহীত হওয়া লোককে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে, তাহলে আমাকেই দিতে হবে। আমাকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচনে বিজয়ী হব।’

অন্যদিকে এ আসন থেকে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন শিল্পপতি মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া। তিনিও দলীয় চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভের আশায় এলাকায় নির্বাচনী কাজ চালিয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রার্থী হিসেবে কাজ করছি। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করেছি। সব সময় তাঁদের পাশে থেকে থেকেছি। এলাকায় পারিবারিক সুনামও রয়েছে। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাকে চায়। দল এ নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মনে করেন, দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক না কেন—দলের এই ক্রান্তিকালে সব ধরনের অন্তঃকোন্দল ভুলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তাঁকে বিজয়ী করবেন।