সবচেয়ে সম্পদশালী মুক্তাদীর, দেনা নেই মোমেন ও ইনামের

সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনে ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে সম্পদ বেশি বিএনপির খন্দকার আবদুল মুক্তাদীরের। প্রায় সমপরিমাণ দেনাও আছে তাঁর। সম্পদের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত এ কে আবদুল মোমেন। তাঁর কোনো দায়দেনা নেই। বিএনপির মনোনীত অপর প্রার্থী ইনাম আহমদ চৌধুরীরও কোনো দেনা নেই। সবচেয়ে কম সম্পদ বাসদের প্রার্থী প্রণব জ্যোতি পালের। কোনো আয় নেই ও নিজের পেশা ‘সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মী’ উল্লেখ করেছেন বাসদের (মার্ক্সবাদী) প্রার্থী উজ্জ্বল রায়।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনানামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সিলেট বিভাগে মর্যাদার আসন হিসেবে পরিচিতি সিলেট-১ (মহানগর ও সদর) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী ১১ জন প্রার্থী এবারই প্রথম নির্বাচন করছেন। এ আসনে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবার নির্বাচন করছেন না। তবে তাঁর ছোট ভাই জাতিসংঘে সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন আওয়ামী লীগের, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর বিএনপির প্রার্থী। এ ছাড়া এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. রেদওয়ানুল হক চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুহাম্মদ ফয়জুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইউসুফ আহমদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) উজ্জ্বল রায়, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের প্রার্থী প্রণব জ্যোতি পাল, স্বতন্ত্র মাওলানা নাসির উদ্দিন ও মো. আনোয়ার উদ্দিন বোরহানাবাদী।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, খন্দকার আবদুল মুক্তাদীর পেশায় আমদানি ও রপ্তানিকারক, বস্ত্র ও ক্যামিকেল প্রস্তুতকারক ব্যবসায়ী। তাঁর বার্ষিক আয় ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৫৬ টাকা। স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৭ লাখ ২২ হাজার টাকা। মুক্তাদীরের ৮ কোটি ২৫ লাখ ৭ হাজার ৭৪৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে আরও ৬ কোটি ২৯ লাখ ৫১ টাকার অস্থাবর সম্পদ। স্থাবর সম্পদ রয়েছে ৪৪ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ ৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার। তবে ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিপর্যায়ে তাঁর ৯ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯৫ টাকার দেনা রয়েছে।

সম্পদের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন শিক্ষকতা ও অন্যান্য। তাঁর বার্ষিক আয় ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা। তাঁর ২ কোটি ৮৭ লাখ ১৮ হাজার ৩৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে আরও ৮ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ। তাঁর নিজের ৪ কোটি ২৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮৫ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর কোনো দেনা নেই।

ইনাম আহমদ চৌধুরী পেশায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাঁর বার্ষিক আয় ৩০ লাখ ৬ হাজার ৪৮০ টাকা। তাঁর ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে আরও ১ কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ। তাঁর নিজের কোনো স্থাবর সম্পদ নেই। তবে তাঁর স্ত্রীর ৩৯ লাখ ৮১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর কোনো দেনা নেই। ১১ প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে কম সম্পদশালী হচ্ছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের প্রার্থী প্রণব জ্যোতি পাল। পেশায় শিক্ষক প্রণবের বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকা। তাঁর ২৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে যৌথ মালিকানায় ৭ একর জমির ওপর নির্মিত একটি টিনশেড বাসা। তাঁর কোনো দেনা নেই।

বার্ষিক কোনো আয় নেই উল্লেখ করেছেন বাসদের (মার্ক্সবাদী) প্রার্থী উজ্জ্বল রায়। তাঁর পেশা উল্লেখ করেছেন, সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মী। কোনো বার্ষিক আয় নেই, ১ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তবে তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ। নিজের ৪০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। কোনো দেনা নেই তাঁর।