মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৪ পরিচালকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সরকারি সম্পত্তি বন্ধক দেখিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ৮ কোটি টাকা ঋণ তুলে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ এনে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের ৪ সদস্যসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।

মামলায় আসামি করা হয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আনোয়ারুল হক, আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), মো. আমান উল্লাহ ও মো. সেলিম, ব্যাংকটির এক্সিকিউটিভ কমিটির সাবেক সদস্য মো. মনসুরুজ্জামান, এস এম সাকিল আখতার ও তৌফিক চৌধুরী, ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাহতাব উদ্দিন, ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তনুশ্রী মিত্র, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রবিউল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক নবী-উস-সেলিম ও মেসার্স প্যাট্রিক ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফরহাদ হোসেনকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্যাট্রিক ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফরহাদ হোসেন ২০০০ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। ঋণের জামানত হিসেবে গুলশান থানার ভাটারা মৌজার ১২ কাঠারও বেশি জমি বন্ধক রাখার প্রস্তাব করেন। কিন্তু ওই জমি ছিল সরকারের অনুকূলে অধিগ্রহণ করা। ওই আবেদন পাওয়ার পর ব্যাংক কর্মকর্তা তনুশ্রী মিত্র ও মোহাম্মদ মাহতাব উদ্দিন সরেজমিনে পরিদর্শন করে মূল্যায়ন করেন। কিন্তু তাঁরা ওই জমি সরকারের অনুকূলে অধিগ্রহণের বিষয়টি মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ না করে গোপন রাখেন। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরদিনই ব্যাংক কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম ও নবী-উস-সেলিম ওই গ্রাহকের অনুকূলে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেন। সুপারিশপত্রে তাঁরাও বন্ধক রাখার জন্য প্রস্তাবিত জমির অধিগ্রহণ করা বিষয়টি গোপন রাখেন।

পরে ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য মো. আনোয়ারুল হক, মো. মনসুরুজ্জামান, আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), মো. আমান উল্লাহ, মো. সেলিম, এস এম সাকিল আখতার ও তৌফিক রহমান চৌধুরী সম্পত্তির মালিকানা পরীক্ষা না করেই ঋণ অনুমোদন করেন। কিন্তু ওই ঋণের বিপরীতে সরকারি অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তিই বন্ধক রাখা হয়। ঋণগ্রহীতা ৮ কোটি টাকা কম্পোজিট ঋণসীমা ভোগ করেন। কিন্তু ঋণগ্রহীতা বিদেশি ক্রেতার চাহিদা ও সময়মতো রপ্তানি কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হওয়ায় রপ্তানি আয় থেকে এই দায় দায় পরিশোধ হয়নি।
এ পর্যন্ত গ্রাহকের কাছে সুদসহ ব্যাংকের মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৪১ হাজার ১২ টাকা। বন্ধকি সম্পত্তির মালিকানা সরকারের থাকায় এখনো ওই অর্থ আদায় হয়নি।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণা করেছেন। এর মাধ্যমে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে সরকারি সম্পত্তি বন্ধক দেখিয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।