হঠাৎ প্রার্থী তালিকা ঝুলল দেয়ালে

মহাসচিব এলেন না। তাঁর পরিবর্তে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে দেয়ালে ১৬১ জন দলীয় প্রার্থীর তালিকাসহ একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে দেওয়া হলো। এই ছিল গতকালের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের চিত্র।

দেয়ালে টাঙানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ ২৯ জন প্রার্থী মহাজোটের প্রতিনিধি হয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন। ওই ২৯ আসনে নৌকা মার্কার কোনো প্রার্থী থাকছে না। এর বাইরে আরও ১৩২টি আসনে উন্মুক্তভাবে লড়বেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। সেখানে লাঙ্গলের পাশাপাশি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরাও থাকছেন। বিকেলে প্রার্থীদের বিষয়ে চূড়ান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ফ্যাক্সে পাঠানো হয়।

তালিকা টাঙানোর পর তাতে নিজের নাম না দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে চিৎকার শুরু করেন গাজীপুর থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয় পার্টির নেতা গাজী ওবায়দুল কবীর মজনু। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দলের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে আসছেন। এবার টাকা দেননি বলে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের চেয়ারম্যান ও দল সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করতে থাকেন তিনি। এ সময় দলের অন্য নেতা–কর্মীরা তাঁকে কার্যালয়ের বাইরে বের করে দেন।

যশোর–২ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ফিরোজ শাহ দাবি করেন, তাঁকে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তিনি যশোর জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি। কিন্তু প্রার্থী তালিকা টাঙানোর পর দেখেন তাঁর আসনে সেলিম রেজা নামের একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সেলিম রেজা বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) থেকে কাঁঠাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁর মনোনয়ন কী করে কাঁঠাল প্রতীকের প্রার্থী পেলেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। বিষয়টি জানতে তিনি এরশাদের রাজনৈতিক সচিব সুনীল শুভ রায়কে ফোন করেছিলেন। সুনীল শুভ রায় নাকি তাঁকে বলেছেন, সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার কথামতো সেলিমকে প্রার্থী করা হয়েছে।

জোটের বাইরেও প্রার্থী করা প্রসঙ্গে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজউদ্দীন আহমেদ বলেন, নেতা–কর্মীদের দাবির মুখেই দল এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠাকুরগাঁও-৩ থেকে মনোনয়ন পাওয়া তিনবারের এ সাংসদ নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তাঁর এলাকায় নৌকার যিনি প্রার্থী হয়েছেন, তাঁর অতীত আওয়ামী লীগ নয়। এ রকম আরও অনেককেই পাওয়া যাবে।

ময়মনসিংহ–৭ থেকে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়েছেন ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান। তিনি মনে করেন, ধানের শীষ ও নৌকার সঙ্গে টেক্কা দিয়েও তাঁর জেতার আশা রয়েছে।

জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্র সমাজের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল কাশেম মনোনয়ন পেয়েছেন জয়পুরহাট–২ আসন থেকে। এই তরুণও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান।