অর্থ ছাড় না হওয়ায় ঢিমেতালে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি

নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য কমিটি গঠন করার ১৪ দিনেও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারেনি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ (ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি)। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, নির্বাচনী অনিয়ম ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে যুগ্ম জেলা জজ ও সহকারী জজের সমন্বয়ে গত ২৫ নভেম্বর ১২২টি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়।

কমিটি গঠনের পর ৬ ডিসেম্বর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত ব্রিফিং অনুষ্ঠানে কমিটির কাজ দৃশ্যমান না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। নিম্ন আদালতের একাধিক বিচারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিইসির ওই দিনের বক্তব্যের পর বিচারকদের অনেকের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কারণ, তদন্ত কমিটি গঠন করার পর সিইসির বক্তব্য দেওয়ার দিন পর্যন্ত তাঁরা কীভাবে দৃশ্যমান হবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাননি। আবার প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দও পাননি। তবে তাঁরা কার্যালয়ে কমিটির কাজ চলমান রেখেছেন।

নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আজ সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রচার শুরু হবে। প্রচারের সময়টাতেই মূলত অনিয়ম, আইনভঙ্গের ঘটনা ঘটে বেশি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে শাস্তি দেন। পাশাপাশি এ সময়ে নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ আসার সংখ্যাও বেড়ে যায়।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, গতকাল রোববার পর্যন্ত নির্বাচনী তদন্ত কমিটির জন্য অর্থ ছাড় হয়নি। প্রতিটি কমিটিকে তিনটি খাতে ৬০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আজ এই অর্থ ছাড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

কয়েকটি কমিটির সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা নিজ নিজ কার্যালয়ে তদন্ত কমিটির কাজ শুরু করেছেন। এর আগের নির্বাচনে ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় গাড়িতে টহলে থাকত। এটা একধরনের দৃশ্যমান হওয়া। কিন্তু এবার এখনো পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কাজটি সেভাবে করা যাচ্ছে না।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ বরাদ্দ বা বাজেট—এসব নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বিষয়। তবে যদি অর্থ ছাড় নাও হয়ে থাকে, তাতে ইনকোয়ারি কমিটির কাজে অসুবিধা হওয়ার কথা না। কারণ, বিশেষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণত অগ্রিম টাকা দেওয়া হয় না, বিল করে টাকা নিতে হয়। তাঁরা কাজ করবেন, প্রয়োজনীয় টাকা পাবেনই।

আইন অনুযায়ী, নির্বাচনী তদন্ত কমিটি কারও অভিযোগের ভিত্তিতে বা নিজ উদ্যোগে নির্বাচনপূর্ব অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে। তবে এই কমিটির কাউকে সরাসরি সাজা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তারা অভিযোগ তদন্ত করে নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করবে।

আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ২৪১ জন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাছাইয়ে সারা দেশে ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করেন ৫৪৩ জন। এর মধ্যে ২৪১ জনের আপিল মঞ্জুর হয়। এই ২৪১ জনের মনোনয়নপত্র আপিলে বৈধ বলে বিবেচিত হওয়ায় তাঁরা প্রার্থিতা ফিরে পান।