বিদ্রোহের আগুন নেভেনি দুটিতে

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর দুই আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা জিইয়ে রইল। বিদ্রোহীদের বসাতে না পারায় এখানে দুই প্রধান জোটের মূল প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন।

এই আসন দুটি হলো চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী)। প্রথমটিতে আওয়ামী লীগের এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম এবং দ্বিতীয়টিতে জামায়াত ইসলামীর উপজেলার নায়েবে আমির জহিরুল ইসলাম জোটের বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। ফটিকছড়িতে মহাজোটের প্রার্থী তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এবং বাঁশখালীতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোটের জাফরুল ইসলাম চৌধুরী মূল প্রার্থী। এই দুই আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে নেতা-কর্মীদের ধারণা।

গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে এই দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করছেন কি না, তা ছিল দেখার বিষয়। গতকাল চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ১৯ প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর মধ্যে এই দুজন ছিলেন না। প্রত্যাহারের পর সর্বশেষ (গতকাল রোববার রাত নয়টা) তথ্য অনুযায়ী ১৬ আসনে ১১৮ প্রার্থী নির্বাচনী দৌড়ে রয়েছেন। তবে বিভিন্ন দল থেকে নির্বাচন কমিশনকে দলীয় প্রার্থীর তালিকা সরবরাহের পর প্রার্থী সংখ্যা চূড়ান্ত হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, জেলার ১০ আসনে ১০ জন প্রত্যাহার করেছেন। তবে একই দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন বিভিন্ন আসনে। কেউ কেউ দলের চূড়ান্ত মনোনয়নের দলীয় চিঠি জমা দিয়েছেন। আবার অনেকে দেননি। দল থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে চিঠি দিয়ে যদি কমিশনে নিজেদের প্রার্থী তালিকা জমা দেওয়া হয়, এমনিতেই অন্যরা বাদ পড়ে যাবেন।

চট্টগ্রাম ১৬ আসনে মোট ১৯ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ছয় প্রার্থী আছেন। তাঁরা হলেন চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে কামাল উদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) শাকিলা ফারজানা, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে আবু আহমেদ হাসনাত ও শওকত আলী নূর, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) মোস্তাফিজুর রহমান ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

প্রত্যাহার শেষে ১৬ আসনের মধ্যে চারটি রয়েছে বিএনপির শরিকদের দখলে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) এলডিপির কর্নেল (অব) অলি আহমদ, চট্টগ্রাম-৫ এ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে এলডিপির নুরুল আলম ও চট্টগ্রাম-১৬ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) জামায়াতের আ ন ম শামসুল ইসলাম।

বাঁশখালীতে জামায়াত নেতা জহিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করেননি। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইল জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বেশির ভাগ আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে একাধিক মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। বাঁশখালীতে কেবল আমাকে দেওয়া হয়। জনগণের মাঝে আমি আছি বলেই দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে।’

একইভাবে ফটিকছড়ি আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এ টি এম পেয়ারুল ইসলামও মনোনয়নপত্র শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করেননি। এখানে মহাজোটের প্রার্থী তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।

প্রত্যাহার করা অন্য প্রার্থীরা হলেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে এলডিপির মো. জসিমউদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে মজহারুল হক শাহ, চট্টগ্রাম-৭ আসনে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আহমদ রেজা, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সুষশময় চৌধুরী ও চট্টগ্রাম-১২ আসনে এলডিপিরর নাহিদা আক্তার।

এ ছাড়া রয়েছেন চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে আবুল বশর মো. জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম-৮ আসনে জেপির ফাতেমা খুরশীদ, চট্টগ্রাম-৯ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির আবু হানিফ ও ন্যাপের আলী নেওয়াজ খান, চট্টগ্রাম-১০ আসনে জামায়াত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী ও জাসদের (ইনু) আনিছুর রহমান, চট্টগ্রাম-১১ আসনে জেএসডির ক্যাপ্টেন শহীদ উদ্দিন মাহবুব ও জাসদের জসিম উদ্দিন।