সাংসদ হওয়ার পর সম্পদ বেড়েছে বাহাউদ্দিনের

আ ক ম বাহাউদ্দিন
আ ক ম বাহাউদ্দিন

কুমিল্লা-৬ (কুমিল্লা আদর্শ সদর, সিটি করপোরেশন ও সেনানিবাস এলাকা) আসনে সাংসদ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিনের বার্ষিক আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ কয়েক গুণ বেড়েছে। তাঁর ব্যাংকে জমা থাকা টাকার পরিমাণও এ জেলার দুই মন্ত্রীর চেয়ে বেশি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে বাহাউদ্দিনের দাখিল করা হলফনামা এবং নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা ঘেঁটে এ তথ্য জানা গেছে। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন।

১০ বছরে ব্যবসার আয় বেড়েছে ১২ গুণ: ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে দাখিল করা হলফনামায় দেখা যায়, বাহাউদ্দিন দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ বছরে পেতেন ৬৯ হাজার ৪০০ টাকা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে তা দাঁড়ায় ৮ লাখ ২০ হাজার টাকায়, এবার ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেখানো হয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে বছরে তাঁর আয় ছিল ২০০৮ সালে ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৮০ টাকা ও ২০১৪ সালে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৬ হাজার ১৮০ টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৮৫০ টাকা। ১০ বছরের ব্যবধানে ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে ১২ গুণ। গত দুবারের হলফনামায় অন্যান্য আয় ছিল না। এবার এ কলামে আয় দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে কয়েক গুণ: ২০০৮ সালে সাংসদ হওয়ার আগে বাহাউদ্দিনের কাছে নগদ সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ছিল। সাংসদ হিসেবে ৫ বছর কাটানোর পর ২০১৪ সালে নগদ ছিল ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮৯৭ টাকা। ১০ বছর সাংসদ থাকার পর তাঁর নগদ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৪৪ টাকা। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাঁর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ২৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯১ টাকা। ২০১৪ সালে তা হয় ৮৮ লাখ ২৪ হাজার ৪৯৯ টাকা, এবার দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৬৬ লাখ ২৮ হাজার ১৩৭ টাকা। ব্যাংকে টাকা রাখার পরিমাণ বেড়েছে ২৪ গুণের বেশি। এ টাকা পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হকের চেয়ে বেশি। ব্যাংকে মুস্তফা কামালের জমা ৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ৭২৮ ও মুজিবুলের ২৭ হাজার ৮১৭ টাকা।

২০০৮ সালে বাহাউদ্দিনের বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির শেয়ার দেখানো হয় দুই লাখ টাকার। ২০১৪ সালে এসব দেখানো হয়নি। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে সাংসদ হওয়ার পর তিনি তিনটি কোম্পানি থেকে সাড়ে ৫৪ লাখ টাকা পেয়েছেন বলে দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নাইস পাওয়ার অ্যান্ড আইটি সলিউশন লিমিটেড থেকে ১৫ লাখ, সোনালি সুইট লিমিটেড থেকে ২৭ লাখ ও নাসুয়া অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড (বিকাশ এজেন্ট) থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা রয়েছে। গত দুই মেয়াদে ব্যাংকে তাঁর স্থায়ী আমানত (এফডিআর) ছিল না। এবার দেখানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাঁর সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল। ২০১৪ সালে ৬১ লাখ টাকার জিপ ও এবার একটি ৮৮ লাখ টাকার জিপ দেখানো হয়েছে।

নগরের মনোহরপুর সোনালি স্কয়ারের বিভিন্ন দোকানদার ও ফ্ল্যাটের অগ্রিম হিসেবে ৭ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা দায় রয়েছে বাহাউদ্দিনের।