কর্মী হত্যার আসামির সঙ্গে সাদেক খানের সখ্য

ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদেক খানের (ডানে) সঙ্গে সভা করেন আদাবর যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে তুহিন। তিনি সাদেক খানের দুই কর্মী হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি। গত বৃহস্পতিবার শ্যামলী ক্লাবে।  ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদেক খানের (ডানে) সঙ্গে সভা করেন আদাবর যুবলীগের আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে তুহিন। তিনি সাদেক খানের দুই কর্মী হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি। গত বৃহস্পতিবার শ্যামলী ক্লাবে। ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদপুরের আদাবরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় দুই কিশোর নিহত হওয়ার মামলার আসামি আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে নেমেছেন। আরিফুর রহমান ওরফে তুহিন নামের এই আসামি গত বৃহস্পতিবার শ্যামলী ক্লাবে এক সভায় ঢাকা-১৩ আসনে (মোহাম্মদপুর) আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাদেক খানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

আরিফুর রহমান আদাবর যুবলীগের আহ্বায়ক। গত ১০ নভেম্বর আদাবরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘাতের সময় পালাতে গিয়ে পিকআপের চাপায় সাদেক খানের দুই কর্মী নিহত হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি গ্রেপ্তার হন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের অনুসারী এই যুবক গ্রেপ্তারের ১৭ ঘণ্টার মধ্যেই জামিনে বেরিয়ে যান।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মুকুল রঞ্জন গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, সরাসরি জড়িত ছিলেন—এমন সন্দেহের ভিত্তিতে আরিফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে ঘটনা উন্মোচন করা যেত।

মোহাম্মদপুরের রাজনীতিতে নানক ও সাদেক খানের বিরোধ বেশ পুরোনো। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে সরকারি দলের মনোনয়ন নিয়ে এই দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয় সাদেক খানকে। নানকের অনুসারী নেতা-কর্মীদের ধারণা, ১০ নভেম্বরের ঘটনা নানকের মনোনয়ন না পাওয়ার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর সাদেক খান এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সভা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার শ্যামলী ক্লাবে তিনি মতবিনিময় সভা করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আরিফুর রহমানও। সভার কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিতে দেখা যায়, আরিফুর সাদেক খানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। সাদেক খানকে আরিফুরের সঙ্গে একান্তে কথা বলতেও দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে নানা আলোচনা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে আরিফুরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রিয়াদ নামের এক ব্যক্তি ফোন ধরে বলেন, ‘আরিফ ভাই মিটিংয়ে। সাদেক খান দলের প্রার্থী আর আরিফ ভাই যুবলীগের নেতা। সে হিসেবে দুজন সভা করতেই পারেন।’ সাদেক খানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ঘটনার দিনই নিহত এক কিশোরের বাবা ফারুক হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় সেদিন রাতে পুলিশ আরিফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত আরিফের জামিন মঞ্জুর করেন।