শেষ মুহূর্তে প্রার্থী বদল, হতাশ বিএনপির নেতা-কর্মীরা

মুনির হোসেন
মুনির হোসেন

নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে প্রাথমিকভাবে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদকে। শাহ্ আলম চূড়ান্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে এলাকায় জোরালো আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বাদ পড়লেন শাহ্ আলম। মনোনয়ন পেলেন ২০–দলীয় জোটের প্রার্থী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুনির হোসেন কাশেমী। এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে।

বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মনে করেছেন, জেলার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সাংসদ শামীম ওসমানের বিপরীতে বিএনপি নেতা মোহাম্মদ শাহ্ আলমের বিকল্প ছিল না। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ দুটি থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ সংসদীয় আসন। এ আসনের মোট সাড়ে ৬ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ভোটার ফতুল্লা অঞ্চলের। বিগত নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আগে থেকেই ফতুল্লা অঞ্চলে বিএনপির দলীয় প্রার্থীরা বেশি ভোট পেয়ে আসছেন। সে হিসেবে এ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীর বিজয়ের সম্ভাবনা বেশি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, ২০–দলীয় জোটের প্রার্থী মুফতি মুনির হোসেন কাসেমীকে এ এলাকার লোকজন তেমন একটা চেনেন না। আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থীর বিপরীতে একজন শক্তিশালী প্রার্থী দেওয়া উচিত ছিল। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মোহাম্মদ শাহ্ আলম বিজয়ী হলেও তাঁকে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করে হারানো হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘শামীম ওসমানের সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে মোহাম্মদ শাহ্ আলমের বিকল্প নেই। হঠাৎ করে দলের বাইরে থেকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’ তিনি বলেন, বিগত ১০ বছর ধরে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা হামলা-মামলার শিকার হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে বিএনপি দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেওয়ায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিএনপি দলীয় অন্য কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলেও দলের নেতা-কর্মীরা মেনে নিতেন।

এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ২০–দলীয় জোট থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁকে আমি চিনি না। ওই এলাকার কেউ চেনে বলে শুনিনি।’

মনোনয়নবঞ্চিত জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম বলেন, ‘২০–দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে যঁাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি মনে হয় আমার চেয়ে বেশি যোগ্য ও জনপ্রিয়। এ কারণে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এর বেশি আমার কিছু বলার নেই।’

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, বিএনপি দলীয় প্রার্থী শাহ্ আলম তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

২০–দলীয় জোটের প্রার্থী মুফতি মুনির হোসেন কাসেমী বলেন, ‘আমাকে জোটের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’