নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে রইলেন ২৮ জন

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর ছয়টি আসনে ৩৯ জনের মধ্যে দুজন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। নওগাঁ-১ আসনে শেষ মুহূর্তে বিএনপির দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। গতকাল রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ছয়টি আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় চূড়ান্ত প্রার্থীদের নামে প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেয়। এরপর বিএনপির আটজন ও আওয়ামী লীগের একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। ফলে নির্বাচনী লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে রইলেন ২৮ জন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, নওগাঁর ছয়টি আসনের ৩৯ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তাঁরা হলেন নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে জাসদের প্রার্থী আজাদ হোসেন ও নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে জামায়াতের প্রার্থী আবদুর রাকিব। আর কোনো প্রার্থী তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি।

ছয়টি আসনে বিএনপির ১৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়। তবে গতকাল বিএনপির পক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ছয়টি আসনে ছয়জন চূড়ান্ত প্রার্থীর নামে দলের প্রতীক বরাদ্দের চিঠি জমা দেওয়া হয়। এ কারণে অপর আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ধরা হবে। এ ছাড়া নওগাঁ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনের পক্ষে দলের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার চিঠি পেয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ফলে এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাবে।

নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) আসনে লড়বেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বিএনপির ছালেক চৌধুরী, জাতীয় পার্টির আকবর আলী, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের মনোনীত প্রার্থী মঙ্গল কিস্কু।

নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে রয়েছেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শহীদুজ্জামান সরকার, বিএনপির সামসুজ্জোহা খান, জাতীয় পার্টির বদিউজ্জামান, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের দেলোয়ার হোসেন ও জাকের পার্টির ফারুক হোসেন।

নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর ও বদলগাছী) আসনে লড়বেন ছয়জন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদার, বিএনপির পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির তোফাজ্জল হোসেন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের জয়নাল আবেদিন, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের সেকেন্দার আলী ও বিএনএফের (বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ফ্রন্ট) জাবেদ আলী।

নওগাঁ-৪ (মান্দা) লড়বেন ছয়জন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, বিএনপির সামসুল আলম প্রামাণিক, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) এনামুল হক, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের শহিদুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাইদুর রহমান ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের এস এম ফজলুর রহমান।

তিনজন প্রার্থী লড়বেন নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে। তাঁর হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নিজাম উদ্দিন জলিল, বিএনপির জাহিদুল ইসলাম ও ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের আশরাফুল ইসলাম।

নওগাঁ-৬ আসনে লড়বেন তিনজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের ইসরাফিল আলম, বিএনপির আলমগীর ও ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের শাহাজাহান আলী।

ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। 

নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন

নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পর আকস্মিকভাবে তা পরিবর্তন করে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ছালেক চৌধুরীকে। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল ছালেক চৌধুরী প্রতীক বরাদ্দের জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠি নওগাঁ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছিল তিনজনকে। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংসদ ছালেক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা। গত বৃহস্পতিবার এই আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু শনিবার বিএনপির মহাসচিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁর নাম পরিবর্তন করে ছালেক চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

ছালেক চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় সর্বশেষ সিদ্ধান্তে আমি মনোনয়ন পেয়েছি। এ জন্য দলের মহাসচিবসহ মনোনয়ন বোর্ডের সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানাই। জয়ী হয়ে আসনটি তাঁদের উপহার দিতে চাই।’