জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাশাপাশি নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী। তিন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠ এখন সরগরম। এই আসনে এবার ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবেই পূর্বপরিচিত। বর্তমান সাংসদ ফরিদুল হক এবারও নৌকার প্রার্থী। এখানে ধানের শীষের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ ওরফে বাবু ২০০১ সালে নির্বাচিত হন। কিন্তু হঠাৎ করে এই আসনে জাতীয় পার্টির আবির্ভাব ঘটে। গত এক বছর জাতীয় পার্টির প্রার্থী তাঁর প্রচার-প্রচারণায় ইসলামপুর উপজেলার হাটবাজার উত্তাল করে রেখেছিলেন। একেক সময় একেক রকম শোডাউনে অন্য আসনের চেয়ে এখানে সংসদ নির্বাচন অনেক আগ থেকেই জমে উঠেছে। তবে জেলার বাকি চারটি আসনের কোথাও জাতীয় পার্টির নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা লক্ষ করা যাচ্ছে না। শুধু এই আসন ব্যতিক্রম। তাই সাধারণ ভোটাররা এই আসনে এবার ত্রিমুখী লড়াইয়ের অভাসের কথা বলছেন। এতে অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ফরিদুল, ধানের শীষের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ ও জাতীয় পার্টির মোস্তফা আল মাহমুদ। এ ছাড়া এ আসনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী মনজুরুল আহসান খান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. মিনহাজ উদ্দিন থাকলেও তাঁদের উল্লেখযোগ্য প্রচার-প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না।
অন্তত ১৩ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে আওয়ামী লীগের ফরিদুল হকের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আল মাহমুদ সমান তালে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির তৎপরতায় এই আসনের লোকজন অনেকটাই ধারণা করেছিলেন, এবার মহাজোট থেকে মোস্তফা আল মাহমুদই মনোনয়ন পান কি না। কিন্তু ফরিদুল হকই নৌকা প্রতীক পেলেন। তবে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে মোস্তফা আল মাহমুদও নির্বাচন করছেন। এক জোটের দুই প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। নৌকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে লাঙ্গলও উঠান বৈঠকসহ নানা প্রচার-প্রচারণা করছে। বিএনপির প্রার্থীও মাঠে রয়েছেন। ফলে এবার এই আসনে ভোটারদের মূল্যায়নও বেড়েছে। তিন প্রার্থীর ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এই আসনে এবার ত্রিমুখী লড়ায়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আসনে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। ইসলামপুরের পশ্চিম অঞ্চলে আমার বাড়ি। পশ্চিম অঞ্চলে পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব ইউনিয়নের মানুষ আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। তাই তাঁদের কথা চিন্তা করেই আমি নির্বাচনী মাঠে রয়েছি। আমি একজন তরুণ ও কর্মদক্ষ মানুষ হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরিদুল হক বলেন, ‘এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে। ওই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই মানুষ আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আমার ভোটের মাঠে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে পারবেন না।’
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বিএনপির প্রার্থী সুলতান মাহমুদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি।