কারাগার থেকে মনিরুলের চিঠি

মনিরুল হক চৌধুরী
মনিরুল হক চৌধুরী

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সময়, সুযোগ ও আইনানুগ অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী কারাগার থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছেন। দুই পাতার এ চিঠিতে তাঁর প্রতি অবিচার, বৈষম্য, একের পর এক ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে হয়রানি ও কর্মীদের জানমাল রক্ষায় সহযোগিতা চেয়েছেন।

গত বুধবার চিঠিটি জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরের কাছে পৌঁছানো হয়। দাবি মানা না হলে মনিরুল হক অনশন শুরু করবেন বলে চিঠিতে হুমকি দেন। চিঠি পাঠানোর পর থেকে মনিরুল অনশনে আছেন বলে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ, লালমাই, নাঙ্গলকোট) আসনে মনিরুল হক চৌধুরী বিএনপির প্রার্থী। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এ আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান সাংসদ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

চিঠিতে মনিরুল হক চৌধুরী লেখেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। বয়স ৭২ বছর। ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের এক বছর পর অবরোধ চলাকালে চৌদ্দগ্রামে একটি মর্মান্তিক ও অমানবিক ঘটনা ঘটে। এর প্রায় দুই বছর পর সম্পূরক অভিযোগপত্রে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর আমি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে কুমিল্লার আদালতে সাতবার হাজিরা দিয়েছি। পরে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এরপর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসি। গত ৬ নভেম্বর জামিনের দিনই আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দেওয়া হয়। এরপর নাঙ্গলকোট থানায়ও দুটি মামলা দেখানো হয়। আমার রিমান্ড শুনানিরও আবেদন করা হয়। আমার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলাগুলোয় জেলা জজ জামিনও দেননি, খারিজও করেননি। অধিকতর শুনানির জন্য জানুয়ারিতে তারিখ রেখেছেন। তাই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আমার কর্মীদের জানমাল রক্ষায় আপনার সহযোগিতা চাই।’

চিঠির শেষাংশে মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আজকের মধ্যে (১২ ডিসেম্বর) আমার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ না পেলে, আমার জামিন মঞ্জুরে কালক্ষেপণ করার প্রতিবাদে আমরণ অনশন করব।’

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘চিঠি পাওয়ার পর রাতেই তিনি খোঁজখবর নিয়েছেন। মনিরুল হক অনশন করছেন না। আদালতের বিষয় নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।’