ভোটের মাঠে এবার ভিন্ন চিত্র দেখছেন সাবের

পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। গতকাল বিকেলে নাসিরাবাদ ইউনিয়নের নাগদারপাড় এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। গতকাল বিকেলে নাসিরাবাদ ইউনিয়নের নাগদারপাড় এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

এবারের নির্বাচনে ভিন্ন চিত্র দেখছেন ঢাকা-৯ আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি দাবি করেছেন, ‘তাঁর এলাকায় যাঁরা বিএনপির প্রতিষ্ঠিত সমর্থক, তাঁরাও এবার তাঁর সঙ্গে খুব ভালোভাবে কথা বলছেন, হাসিমুখে কথা বলছেন। যাওয়ার আগে হাত মিলিয়ে বলছেন, এবার আমরা নৌকায় ভোট দেব।’

 গতকাল সোমবার বিকেলে খিলগাঁওয়ের শেখের জায়গা এলাকায় অধ্যাপক আলী আহমদ উচ্চবিদ্যালয়ে নির্বাচনী পথসভায় অংশ নিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন। নাসিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এই পথসভার আয়োজন করে।

১৯৯৬ সালে প্রথম নির্বাচনের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে এটা আমার পঞ্চম নির্বাচন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনের প্রচারে আমার সঙ্গে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁরা বলতেন, এটা বিএনপির বাড়ি, এটা আওয়ামী লীগের বাড়ি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বলতেন, এটা জাতীয় পার্টির সমর্থকদের বাড়ি। অর্থাৎ আমাকে আগে থেকে তাঁরা বলে দিতেন, কোন বাড়িতে কোন ধরনের সমর্থক বসবাস করেন। তবে এবার আমি ভিন্ন চিত্র পাচ্ছি।’

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নিয়মিত গণসংযোগ, পথসভা ও বিভিন্ন সামাজিক–সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তবে সড়ক আটকে কোনো সভা করছেন না তিনি।

গতকাল বিকেলে শেখের জায়গায় পথসভার পরে নাগদারপাড় এলাকার আরেকটি পথসভায় তিনি অংশ নেন। সাধারণত ক্ষমতাসীন দলের বেশির ভাগ প্রার্থীর প্রচার ও গণসংযোগে দলীয় নেতা-কর্মী ও নিজের অনুসারীদের ব্যাপক মহড়া থাকে। কিন্তু সাবের হোসেন চৌধুরীর পথসভা ও গণসংযোগে এমন চিত্র দেখা যায়নি। বর্তমান সাংসদ হিসেবে পুলিশের নিরাপত্তা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি তাঁর রাজনৈতিক এ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে রাখেননি। এ দুটি পথসভা শেষ করে তিনি বাসাবো বালুর মাঠে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ গঠিত সরকারের মন্ত্রিসভার তিনি ছিলেন কনিষ্ঠ সদস্য। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর উদ্যোগেই ২০০০ সালের জুন মাসে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ এবং টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট নতুন মাত্রায় পৌঁছায়।

পথসভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, সাবের হোসেন চৌধুরী একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। গত দুই দশকের বেশি সময় সাবের হোসেন চৌধুরীর কোনো আত্মীয় এলাকায় কখনো কোনো প্রভাব বিস্তার করেননি। তাঁর মতো নির্ভেজাল, স্বচ্ছ রাজনীতিবিদকে জনগণ বিপুল ভোটে বিজয়ী করে আবারও সংসদে পাঠাবে।

 প্রচারকালে ঢাকা–৯ আসনে পিছিয়ে পড়া তিনটি ইউনিয়নের জন্য ১০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দের ব্যবস্থা করেছেন বলেও ভোটারদের জানান ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী। তিনি বলেন, এ এলাকা হবে পরিকল্পিত নগর এলাকা। যেখানে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এলাকায় খেলার মাঠ, শিশুপার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করার ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে জায়গা নির্ধারণ করা হবে।

সম্প্রতি এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের ওপর হামলার প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন তো প্রশাসন আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এরপরও প্রশাসনকে বলেছি সবার জন্য সমান সুযোগ, সমান মর্যাদা, সমান অধিকার নিশ্চিত করতে। আফরোজা আব্বাস সম্মানিত ব্যক্তি। বিষয়টি পুলিশকে তদন্ত করার জন্য বলেছি।’