ভোটের মাঠে কেবল আ.লীগের প্রার্থী

নাহিম রাজ্জাক
নাহিম রাজ্জাক

শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা-গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জের একাংশ) আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় রয়েছেন কেবল আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিম রাজ্জাক। তিনি ও তাঁর সমর্থকেরা গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও মাইকিং করছেন। তবে অন্য প্রার্থীদের কোনো তৎপরতা নেই।
সাংসদ নাহিম রাজ্জাক প্রয়াত সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হন আব্দুর রাজ্জাক। ২০১২ সালে তাঁর মৃত্যুর পর ছেলে নাহিম রাজ্জাক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন। ২০১৪ সালেও তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হন।
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব মিয়া নুরুউদ্দিন আহম্মেদ (অপু), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হান্নান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী সুশান্ত ভাওয়াল ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আবু হানিফ।
গতকাল মঙ্গলবার ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোস্টার ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু অন্য কোনো প্রার্থীর পোস্টার ও প্রচারণা চোখে পড়েনি।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘আমার নির্বাচনী ক্লাবে হামলা করে কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সহায়তা পাচ্ছি না। মামলা-হামলার ভয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় হতে পারছে না। আমি পারিবারিক কিছু কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। খুব শিগগির এলাকায় আসব। নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় হব।’
দু-এক দিনের মধ্যেই পুরোদমে প্রচার–প্রচারণা শুরুর পরিকল্পনা করছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী সুশান্ত ভাওয়াল। তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের সংগঠিত করার কাজ চলছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেছি। কিছু এলাকায় গণসংযোগ করছি। পোস্টার ছাপানো হয়েছে। শিগগিরই তা ঝোলানো হবে।’
তবে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী আবু হানিফ বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছি। ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি। দু-এক দিন পরই বড় কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। পোস্টার টাঙানো শুরু করেছে কর্মীরা।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিম রাজ্জাক গতকাল সকাল নয়টায় ডামুড্যার বাসভবন থেকে নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে বের হন। পূর্ব ডামুড্যায় গণসংযোগ, গোসাইরহাট উপজেলার কাকইসার এলাকায় পথসভা, কোদালপুর বাজারে গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য দেন। এরপর তিনি গোসাইরহাট উপজেলা সদরে কর্মিসভায় অংশ নেন। সন্ধ্যায় তিনি সামন্তসার এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় যোগ দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। এলাকায় অভাবনীয় উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। অন্য প্রার্থীদের প্রচারণা থাকলে আরও আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হতো।
বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিম রাজ্জাক বলেন, কোনো প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপির প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চান।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচারণায় অংশ নেবেন, এটাই স্বাভাবিক। কোনো কোনো স্থানে এখনো সব দলের প্রার্থীরা সক্রিয় হননি। বাকি প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মৌখিক কিছু অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। তবে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়নি।