সরব আ.লীগ, ঝটিকা প্রচারে জামায়াত

চট্টগ্রাম-১৫ আসনের লোহাগাড়ার চরম্বায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর গণসংযোগ। গতকাল সকালে।  প্রথম আলো
চট্টগ্রাম-১৫ আসনের লোহাগাড়ার চরম্বায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর গণসংযোগ। গতকাল সকালে। প্রথম আলো

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে আওয়ামী লীগের প্রচারণা ততই বাড়ছে। দলটির মনোনীত প্রার্থীসহ নেতা-কর্মীরা বিরামহীন প্রচারণায় নেমেছেন। অন্যদিকে ২০-দলীয় জোটের প্রার্থীর প্রচারণা তেমন নেই। জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন গ্রামে ঝটিকা মিছিল নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। আর ২০-দলীয় জোটের হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন জামায়াতের সাবেক সাংসদ ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম। তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। শামসুল ইসলাম বর্তমানে কারাগারে আছেন।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণায় জামায়াতের চেয়ে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে রয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের আগে থেকেই দলটির নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে দলটির প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ১২ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ দলটির নেতা-কর্মীরা সাতকানিয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও লোহাগাড়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পথসভাসহ নানা প্রচারণায় ব্যস্ত। আর জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের ভয়ে গোপনে ও কৌশলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঝটিকা মিছিল বের করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি ভোটারের ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরা প্রচারণা চালান। মাঝেমধ্যে জামায়াত প্রার্থীর ধানের শীষ প্রতীকের প্রচারণায় বিএনপির কয়েকজন নেতাও অংশ নিচ্ছেন। তবে বিএনপির তৃণমূলের কোনো কর্মীকে ওই প্রচারণায় দেখা যায় না।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীরা আচরণবিধি মেনে উৎসবমুখর পরিবেশে নৌকা প্রতীকের জয়ের জন্য প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখন সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার সাধারণ মানুষও নৌকার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।

সাতকানিয়ার চরতিতে জামায়াতের প্রার্থী আ ন ম শামসুল ইসলামের পক্ষে ঝটিকা মিছিল নিয়ে প্রচারণায় দলটির নেতা-কর্মীরা। গত রোববার বিকেলে।  প্রথম আলো
সাতকানিয়ার চরতিতে জামায়াতের প্রার্থী আ ন ম শামসুল ইসলামের পক্ষে ঝটিকা মিছিল নিয়ে প্রচারণায় দলটির নেতা-কর্মীরা। গত রোববার বিকেলে। প্রথম আলো

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বিএনপির নেতা-কর্মীরা জামায়াতবিরোধী হিসেবে পরিচিত। বৃহত্তর স্বার্থে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে এ আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দিলেও স্থানীয় বিএনপির অধিকাংশ নেতা-কর্মী নীরব ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে জামায়াতের নেতারা প্রকাশ্যে নেই। সেখানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কী করবেন।
২০-দলীয় জোটের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ জাফর সাদেক বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্দেশে জামায়াত প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রচারকাজে নিয়োজিত কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। পুলিশ জামায়াত কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করছে। এ জন্য জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কৌশলী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরা বিরামহীন প্রচারণায় অংশ নিতে না পারলেও ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে তার জবাব দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী প্রথম আলোকে বলেন, নৌকা প্রতীকের পক্ষ থেকে কারও প্রচারকাজে বাধা দেওয়া হয়নি। তাঁরা নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য অন্যের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা বলেন, পুলিশ কোনো প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করছে না। জামায়াতের অধিকাংশ নেতা-কর্মী নাশকতার মামলার আসামি। পরোয়ানামূলে তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।