'ধানও নাই নৌকাও নাই কারে ভোট দিতাম!'

সিলেট-২ আসনে বিএনপির তাহসিনা রুশদীর প্রার্থিতা স্থগিতের আদেশ বহাল রাখায় প্রচারণায় নামেনি বিএনপি। তবে এখনো ঝুলছে পোস্টার। গতকাল দুপুরে বিশ্বনাথের পশ্চিমবাজারে।  প্রথম আলো
সিলেট-২ আসনে বিএনপির তাহসিনা রুশদীর প্রার্থিতা স্থগিতের আদেশ বহাল রাখায় প্রচারণায় নামেনি বিএনপি। তবে এখনো ঝুলছে পোস্টার। গতকাল দুপুরে বিশ্বনাথের পশ্চিমবাজারে। প্রথম আলো

‘ধানও নাই, নৌকাও নাই। বড় দুইটা দলের কোনো প্রার্থী নাই। কারে ভোট দিতাম? ভোট দেওয়াত নাও যাইতাম পারি!’
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাগিচা বাজারের ব্যবসায়ী মানিক মিয়ার কণ্ঠে শোনা গেল এমন হতাশা। শুধু মানিক মিয়াই নন; সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের বিশ্বনাথ উপজেলার বেশির ভাগ ভোটার কথা বললেন এই সুরে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সরেজমিনে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
আসনটিতে জাপার বর্তমান সাংসদ ইয়াহ্‌ইয়া চৌধুরীকেই মনোনীত করেছে মহাজোট। ফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেননি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ আছে। এদিকে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যেও বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর শেষ সময়ে এসে উচ্চ আদালতের আদেশে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত হয়ে যায়। গতকাল উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করলেও শুনানিতে ‘নো অর্ডার’ দেন আপিল বিভাগ। এর ফলে সিলেট-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী তাহসিনা রুশদীর লুনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তিনি বিএনপির ‘নিখোঁজ’ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী।
গতকাল সরেজমিনে বিশ্বনাথ উপজেলায় গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ভোটারের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, বড় দুই দল নির্বাচনে না থাকায় বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর আসনে উৎসবমুখর নির্বাচনী আমেজ আর থাকছে না।
বিশ্বনাথ বাজারের সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাকির আহমদ নিজেকে বিএনপির সমর্থক জানিয়ে বলেন, শেষ মুহূর্তে এসে ধানের শীষের প্রার্থী নেই। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩০ তারিখ ভোট দিতে যাবেন না। একই এলাকার আওয়ামী লীগের সমর্থক আহমেদ জামিল বলেন, ‘গত নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে পারিনি। এবারও নৌকা না থাকায় ভোট দিতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।’
উপজেলার বাগিচা বাজারের বাসিন্দা আব্বাস আলী বলেন, ‘প্রার্থীরা অনেকেই অনেক কিছু বলছেন। কিন্তু এলাকায় বড় দুই দলের কোনো প্রার্থী নেই। যার কারণে সরকার গঠন করলে জয়ী প্রার্থীরা ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন কি না, সন্দেহ রয়েছে। মানিক মিয়া নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে তিনবার ভোট দিয়েছি। শুধু একটি ছাড়া বাকিগুলোতে ধানের শীষ ও নৌকার প্রতীক ছিল।’