মুক্তিযোদ্ধাদের এলাকায় নৌকার জয় চাইলেন কামাল মজুমদার

শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন কামাল আহমেদ মজুমদার। গতকাল সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।  ছবি: প্রথম আলো
শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন কামাল আহমেদ মজুমদার। গতকাল সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনে রাজাকার ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে বর্জন করে নৌকাকে আবারও জেতানোর আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেছেন, মিরপুর হলো বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত এলাকা। তাই এখানে যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারকে জয়ী হতে দেওয়া যাবে না।

গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। মিরপুর, কাফরুল ও শেরেবাংলা থানার একাংশ নিয়ে ১৫ নম্বর আসন।

এই নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বৃহত্তর মিরপুরে বুদ্ধিজীবীরা সমাহিত, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে এখানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। পুরো মিরপুর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত একটি এলাকা। এখানে কুখ্যাত রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, যারা মা-বোনদের হত্যা করেছে, তাদেরই এক নেতা জামায়াতে ইসলামীর শফিকুর রহমানকে বিএনপির জোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখন জনগণকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে, এই বিজয়ের মাসে তাঁরা কাকে ভোট দেবেন। যুদ্ধাপরাধী রাজাকারকে, নাকি একজন মুক্তিযোদ্ধাকে?

মিরপুরে সন্ত্রাস দমন প্রসঙ্গে এই সাংসদ বলেন, ‘একসময় মিরপুর অত্যন্ত জরাজীর্ণ ও সন্ত্রাসীদের এলাকা ছিল। বৃহত্তর মিরপুর ভেঙে ফেলার পর এর সবচেয়ে খারাপ এলাকা পড়ে ১৫ নম্বর আসনে। আমাকে দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন এই এলাকা ঠিক করতে। তিনি সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে আইন পাস করেছেন আর আমি এলাকায় সেগুলো বাস্তবায়ন করেছি।’

সভায় উপস্থিত থাকা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে বলেন কামাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনেও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে মানুষের ঘরে গিয়েছেন। আশা করি এবারও ঘরে ঘরে গিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে তুলে ধরবেন।’

সভায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রহীম, আয়ুর্বেদিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দৌলত আল মামুন, রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর হোসেন ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সভায় তাঁরা গত ১০ বছরে মিরপুরে কামালের উন্নয়নকাজ তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রহীম বলেন, ‘কামাল আহমেদ এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। সবার প্রতি অনুরোধ তাঁকে ভোট দিয়ে আবারও নৌকার জয় নিশ্চিত করুন।’

মতবিনিময় সভা শেষে বিকেলে শেওড়াপাড়ায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠক ও কাফরুলে জনসভায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর। 

ভোরে চলে ধানের শীষের প্রচার
এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান। প্রচারণার বিষয়ে জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে ভোটাররা জানিয়েছেন, প্রকাশ্যে বড় পরিসরে ধানের শীষের প্রচারণা নেই।

সেনপাড়া ঈদগাহ মাঠের সামনে মুশফিক রহমান নামের এক বাসিন্দা বলেন, ভোরের দিকে তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিছু প্রচারণা চালান। পোস্টার টাঙান।

তবে গতকাল দুপুরে এই এলাকা ঘুরে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো পোস্টার দেখা যায়নি।