ভোটে থাকলেও মাঠে নেই নিজামীপুত্র নাজিবুর

নাজিবুর রহমান
নাজিবুর রহমান

পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া আংশিক) আসনে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান। প্রতীক পেয়েছেন আপেল। কিন্তু ভোটে প্রার্থী হিসেবে তিনি থাকলেও মাঠে তাঁকে তেমন দেখা যাচ্ছে না। চালাচ্ছেন না কোনো ধরনের প্রচারণা।
বিগত নির্বাচনের হিসাব-নিকাশ পর্যালোচনা করে ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরশাদ সরকার পতনের পর ১৯৯১ সালে প্রথম এ আসনটি দখল করেন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। ২০০১ সালে আবার নির্বাচিত হন। আসনটিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করে জামায়াত। ২০০৮ সালে সব অবস্থান ভেঙে আওয়ামী লীগ আসনটি দখলে নেয়। শুরু হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। গ্রেপ্তার হন মতিউর রহমান নিজামী। এখানে চাপে পড়ে জামায়াত। ২০১৬ সালের ১০ মে মানবতাবিরোধী অপরাধে মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়। এতে আসনটিতে নেতৃত্ব–সংকটে পড়ে জামায়াত।
দলটির সাত-আটজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জনা যায়, নেতৃত্বের এই সংকট কাটাতে সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা জামায়াতের কিছু নেতা নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমানকে সামনে আনার চেষ্টা শুরু করেন। নির্বাচনের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে স্থানীয় জামায়াতের একাংশ নাজিবুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী করার
ঘোষণা দেয়। কিন্তু কেন্দ্রীয়ভাবে বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল বাছেত খানকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এতে বিভক্ত হয়ে পড়ে জামায়াত। গত ১২ নভেম্বর নাজিবুর রহমানের সমর্থকেরা
ক্ষুব্ধ হয়ে সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। একই সঙ্গে দলের এ অংশের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাজিবুর রহমানের
নাম ঘোষণা করেন। স্থানীয় লোকজন ও ভোটাররা জানান, বিভিন্ন নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে নাজিবুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করা হলেও এখনো তিনি ভোটের মাঠে নামেননি। তাঁর পক্ষে মাইকিং, পোস্টার, ব্যানার—কোনো কিছুই নেই।
এ প্রসঙ্গে সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোস্তফা কামাল বলেন, কোনো প্রার্থী না থাকায় নাজিবুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা হয়নি। ফলে তাঁর প্রার্থিতা রয়ে গেছে। তবে তিনি নির্বাচন করবেন না।
বেড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল বাছেত খান বলেন, ‘আমরা দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নই। আমাদের কোনো মতবিরোধও নেই। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সবাই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি।’