অসাম্প্রদায়িকতার বার্তা নিয়ে ভোটারদের কাছে মেনন

ফকিরাপুল বাজারে গতকাল গণসংযোগ করেন রাশেদ খান মেনন।  প্রথম আলো
ফকিরাপুল বাজারে গতকাল গণসংযোগ করেন রাশেদ খান মেনন। প্রথম আলো

বেলা দুইটার আগেই কর্মী-সমর্থকেরা এসে হাজির। কিছুক্ষণ পরপর তাঁরা ‘নৌকা’ ‘নৌকা’ স্লোগান দেন। রাশেদ খান মেনন উপস্থিত হতেই স্লোগানের আওয়াজ বাড়ে। তৎপর হয়ে ওঠেন তাঁরা। কর্মী-সমর্থকের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা মেনন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ফকিরাপুল বাজারে রাশেদ খান মেননের নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে এ দৃশ্য। সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ঢাকা-৮ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এবার নির্বাচন করছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮ থেকে ১৩ এবং ১৯ থেকে ২১—এই ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা-৮ আসন গঠিত। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৩ জন।

 গতকাল ফকিরাপুল বাজার থেকে গণসংযোগ শুরু করেন রাশেদ খান মেনন। বাজারের দোকানদার, ক্রেতা, পথচারীদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। মন্ত্রীকে এক নজর দেখতে রাস্তার দুই পাশে ভিড় করে নানান বয়সী মানুষ। মন্ত্রী তাঁদের কারও সঙ্গে করমর্দন করেন, কারও সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

ভোটারদের উদ্দেশে মেনন বলেন, এবারের নির্বাচন তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতা-পরবর্তী অসাম্প্রদায়িকতা, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটাররা নিশ্চয়ই বিএনপি-জামায়াতের ভয়ংকর দিনগুলোতে ফিরে যাবেন না। তাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন। তরুণ প্রজন্মও তাঁদের প্রথম ভোট নৌকায় দেবেন।

রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে বলেন, এই অঞ্চলের বড় সমস্যা মাদকাসক্তি। গত পাঁচ বছরে এটা বেশ বেড়ে গিয়েছিল। সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকটা কমেছেও। নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম কাজ হচ্ছে তরুণদের রক্ষা করতে এই এলাকা মাদকমুক্ত করা। দ্বিতীয় প্রাধান্য হবে দুর্নীতি প্রতিরোধ। মন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি এত ব্যাপক আকারে হচ্ছে। মানুষের মনে কোনো স্বস্তি নেই। তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে দুর্নীতি ব্যাধিটি দূর করতে পারব।’ এর ব্যাখ্যা হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা জজ (বিচারক), সরকারি কর্মকর্তা এবং আমলাদের অঞ্চল। এখান থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ শুরু হলে দেশে উদাহরণ তৈরি হবে।’

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসের প্রচারণায় হামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেনন বলেন, ‘মির্জা আব্বাসের ওপর হামলা হয়নি।  দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। তিনি টেলিভিশনে কিছু কথা বলেছিলেন, যেগুলো আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উত্তেজিত করেছিল। তারই একটি ছোট্ট বহিঃপ্রকাশ ছিল সেদিন।’ মেনন দাবি করেন, তিনি গেল কয়েক বছরে এই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, টার্মিনালে খুনোখুনি, শাহজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের অনুসারীদের সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে পেরেছেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে ১৩টি লক্ষ্যের মধ্যে তরুণদের বেকার ভাতা প্রদান, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দেওয়া কথা বলা হয়েছে। সাংসদ হিসেবে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান মেনন।

রাশেদ খান মেনন ফকিরাপুল বাজার, কালভার্ট রোড ঘুরে আরামবাগে গিয়ে প্রচারণা শেষ করেন। কৌতূহলী জনতার অনেককেই মুঠোফোনে ছবি তোলেন এবং ভিডিও করতে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ মন্ত্রীকে দেখতে পথের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন।