বেশির ভাগ প্রার্থী ব্যবসায়ী

কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ২২টি আসন রয়েছে। এসব আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের ৪৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৫ জন প্রার্থীর পেশা ব্যবসা। কৃষিপ্রধান এ দেশে কৃষি পেশার প্রার্থী নেই একজনও।

ওই ৪৪ জন প্রার্থীর মধ্যে পেশা হিসেবে শুধু রাজনীতি দেখিয়েছেন একজন। তিনি কুমিল্লা-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-রব) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক। একই সঙ্গে রাজনীতি ও ব্যবসা পেশা দেখিয়েছেন কুমিল্লা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিন জেলার মধ্যে কুমিল্লায় আসন রয়েছে ১১টি। চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যথাক্রমে পাঁচটি ও ছয়টি করে আসন রয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য এসব আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ওই দুই জোটের প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বদরুল হুদা, সভাপতি, সনাক, কুমিল্লা
বদরুল হুদা, সভাপতি, সনাক, কুমিল্লা



জানতে চাইলে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি বদরুল হুদা বলেন, রাজনীতিবিদেরা রাজনৈতিকভাবে মানবসেবার ব্রত নিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যবসায়ী যিনি বা যাঁরা সাংসদ হবেন, তখন তিনি জনবান্ধবের চেয়ে ব্যবসাবান্ধব চিন্তা বেশি করবেন। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও ব্যবসাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে তাঁর। তাই যাঁরা সব সময় রাজনীতি করে থাকেন, তাঁরা সংসদে এলে দেশের জন্য আরও বেশি কল্যাণ হবে। কৃষিপ্রধান এ দেশে সব দলেরই কৃষকদের নিয়ে অঙ্গসংগঠন রয়েছে। কিন্তু এ সংগঠন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় খুব কম। এ কারণে সংসদে দেশের প্রধান জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। কৃষকদের কথা ভাবার কেউ থাকছেন না।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, ঐক্যফ্রন্টের ২২ প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জনই ব্যবসায়ী। আর মহাজোটে ব্যবসা পেশার রয়েছেন ১০ জন। পেশাগত পরিচয়ের দিক থেকে শতকরা হিসেবে এ হার ৫৬ দশমিক ৮২ ভাগ। ব্যবসার পরই একক পেশার সবচেয়ে বেশি প্রার্থী আইনজীবী। এ পেশায় রয়েছেন মহাজোটের তিনজন আর ঐক্যফ্রন্টের একজন। অর্থাৎ শতকরা ৯ দশমিক ০৯ ভাগ প্রার্থী আইন পেশায় রয়েছেন। একক পেশায় সবচেয়ে কম প্রার্থী রাজনীতিবিদ। দুই জোটের মধ্যে শুধু ঐক্যফ্রন্টে একজন প্রার্থী রাজনীতি পেশায় রয়েছেন; শতকরা হিসাবে যা ২ দশমিক ২৭ ভাগ। তবে মহাজোটের একজন পেশা হিসেবে রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা দেখিয়েছেন। একক পেশা হিসেবে চাকরি দেখিয়েছেন একজন। বাকিগুলোর মধ্যে মহাজোটের পাঁচজন ও ঐক্যফ্রন্টের একজন প্রার্থী মিশ্র পেশায় রয়েছেন। পেশা হিসেবে ‘অন্যান্য’ দেখিয়েছেন মহাজোটের চারজন ও ঐক্যফ্রন্টের তিনজন। এই তিন জেলার প্রধান দুটি জোটের ৪৪ জন প্রার্থীর মধ্যে কেউই কৃষক নন।