সব মানুষের নেতা হতে চান মহিবুল

সভায় বক্তব্য দেন মহিবুল হাসান চৌধুরী। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে।  প্রথম আলো
সভায় বক্তব্য দেন মহিবুল হাসান চৌধুরী। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে। প্রথম আলো

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনের কারাবন্দী বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এই সমবেদনা জানান।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নওফেল বলেন, ‘ওনার (শাহদাতের) বিষয়টা একটা বিচারাধীন বিষয়। এ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবে বিনা দণ্ডে কারাগারে থাকার যন্ত্রণা এবং জ্বালা আমরা বুঝি। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত একটা অস্বস্তির মধ্য দিয়ে পরিবারকে যেতে হয়। আমার বাবা (এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী) দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে ছিলেন। আমরা একটা অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। আমি তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমব্যথী।’ তবে সরকার কাউকে হয়রানি করছে না বলে মন্তব্য করেন নওফেল।

নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এই মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে নওফেল সাংসদ নির্বাচিত হলে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে বাবার মতো ‘সকলের নেতা’ হওয়ার অঙ্গীকার করেন।

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আমাকে ছোটবেলা থেকেই আওয়ামী লীগের আদর্শের দীক্ষা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ আমি ধারণ করি। সেখান থেকে একচুলও আমি নড়ব না। তবে যদি নির্বাচিত হই, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করাটা আমার দায়িত্ব। আমি সেটা পালনের অঙ্গীকার করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব হবে, যাঁরা এখানে আমাদের দলের অভিজ্ঞ নেতৃবৃন্দ আছেন, তাঁদের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।’

নওফেল বলেন, ‘দলের ইশতেহারের বাইরে নিজের ইশতেহার দেওয়া সমীচীন নয় । তবে আমি নির্বাচিত হলে, একজন আইন প্রণেতা হিসেবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাধারণ নাগরিকদের প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করতে সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন ও জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যেন নাগরিক সুবিধাটা নিশ্চিতভাবে পেতে পারে, সে জন্য আমি কাজ করব। সাধারণ মানুষের নাগরিক সংকটগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের অবগত করা এবং জবাবদিহির আওতায় আনতে কাজ করব।’

চট্টগ্রামকে ঘিরে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে উল্লেখ করে নওফেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক পরিকল্পনা নিয়েছেন। সেই মহাপরিকল্পনাগুলোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অবশ্যই জনগণের সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজন আছে।

এ ছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং নারীর ক্ষমতায়নে তিনি কাজ করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, ‘একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের জন্য চট্টগ্রামকে অগ্রণী ভূমিকায় রাখব। আমরা অসাম্প্রদায়িক, নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল চট্টগ্রাম গড়ব।’

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে হচ্ছে বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। কিন্তু অ্যাডমিরালিটি আদালত ঢাকায়। এটা তো থাকার কথা চট্টগ্রাম বন্দরের পাশে। সবকিছু রাজধানীকেন্দ্রিক। রাজধানী এখন শ্বাস নিতে পারছে না। চট্টগ্রামকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নওফেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, সদস্যসচিব সহসভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ, সহসভাপতি সুনীল সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, আইনজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মাহমুদ হাসনী ও জহরলাল হাজারী, নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ।