বিএনপির সব নেতাই আসামি!

কক্সবাজার-১ আসনের আওতাধীন এলাকা চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা বিএনপির পদে থাকা সব নেতাই কোনো না–কোনো মামলার আসামি। এ কারণে পুলিশি হয়রানির ভয়ে তাঁরা প্রচারণায়ও অংশ নিতে পারছেন না। এমন অভিযোগ করেছেন এই আসনের বিএনপির প্রার্থী হাসিনা আহমেদ।

জানা গেছে, পেকুয়া থানায় এক রাতের ব্যবধানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পাঁচটি ও শুক্রবার রাতে একটি মামলা হয়। এসব মামলার পাঁচটি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় পোড়ানোর অভিযোগে এবং একটি মামলা হয় পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে। এসব মামলায় সুনির্দিষ্ট আসামি করা করা হয়েছে ৩৭২ জনকে। অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ১২২-১৫৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদীরা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

গত শুক্র ও শনিবার দায়ের করা মামলাগুলোতে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাফায়েত আজিজ, পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও শিলখালী ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন, পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন, উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক কামরান জাদিদ, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সোহেল আজিম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোছাইন, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, তরুণ প্রজন্ম দলের সভাপতি তৌহিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির প্রার্থী হাসিনা আহমেদ  বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে কার্যত আমাকে একা করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দিচ্ছে না আওয়ামী লীগের লোকজন। যেখানে যাচ্ছি, সেখানেই হামলা করা হচ্ছে। এভাবে তো নির্বাচন হয় না। কক্সবাজার-১ আসনে এখন একপক্ষীয় ভোটের প্রচার চলছে।’

পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বারেক বলেন, শুক্রবার রাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা একের পর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপরও হামলা করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ঘটনায় কি মামলা হবে না? আর মামলা হলেই কেন বলা হয় প্রতিহিংসা? এখন প্রশাসনের উচিত বিএনপির সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা।

পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরান জাদিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজনই তাঁদের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। কয়েকটি নির্বাচনী কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে আগুন দিচ্ছেন, তার ভিডিও চিত্র আমাদের হাতে এসেছে। একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে আওয়ামী লীগ এই কৌশল নিয়েছে।’

পেকুয়া থানার ওসি জাকির হোসেন ভূঁইয়া  বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যাচেষ্টা এবং পাঁচটি নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পৃথক ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে জয়নাল আবেদিন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এখানে মিথ্যা বা সাজানো মামলার কী আছে? নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিলে মামলা হবে না? যেখানেই অপরাধ হবে, সেখানেই পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।