বিজ্ঞানচিন্তার 'বিজ্ঞানে নোবেল' পাবলিক লেকচার অনুষ্ঠিত

বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজনে ‘বিজ্ঞানে নোবেল ২০১৮’ শিরোনামের বিশেষ পাবলিক লেকচারে পাঠকের প্রশ্ন। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা
বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজনে ‘বিজ্ঞানে নোবেল ২০১৮’ শিরোনামের বিশেষ পাবলিক লেকচারে পাঠকের প্রশ্ন। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বাংলাদেশও এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। তরুণদের মধ্যেও দিন দিন বাড়ছে বিজ্ঞানের আগ্রহ। সারা বিশ্বের মতো এ দেশের তরুণদের মধ্যেও বিজ্ঞানে নোবেল নিয়ে আগ্রহ প্রবল। বিজ্ঞানীদের নোবেল পাওয়া ও তাঁদের আবিষ্কার মানবকল্যাণে কী অবদান রাখল, সেসব নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান দেশের তরুণেরাও। তাঁদের সেই আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই সোমবার বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজন করে ‘বিজ্ঞানে নোবেল ২০১৮’ শিরোনামের বিশেষ পাবলিক লেকচার। বিকেল ৪টায় লেকচারটি আয়োজিত হয় রাজধানীর জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে।

শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কুসংস্কারমুক্ত ও বিজ্ঞানমনস্ক তরুণ সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞানচিন্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গোটা পৃথিবীতে ঘটে চলা বিজ্ঞানের বিচিত্র ঘটনা সহজ ভাষায় তরুণদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বিজ্ঞানচিন্তা। এ বছর বিজ্ঞানে যাঁরা নোবেল পেয়েছেন, তাঁদের গবেষণা ও মানবকল্যাণে সেসবের অবদান তুলে ধরার লক্ষ্যেই আজকের এই আয়োজন।

বিশেষ পাবলিক লেকচারে বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো ডিএক্সের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. কামরুল হাসান। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা
বিশেষ পাবলিক লেকচারে বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোলো ডিএক্সের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. কামরুল হাসান। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা

এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল নিয়ে আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব বলেন, এ বছর রসায়নে দুই নোবেলজয়ী পি এলিসন ও তাসুকু হোনজা ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তাঁরা প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতির চেয়ে শরীরের স্বয়ংক্রিয় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁদের এই আবিষ্কার ক্যানসার চিকিৎসাপদ্ধতিকে ভবিষ্যতে আরও সহজ করে তুলবে।

রসায়নে এ বছরে নোবেল নিয়ে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপেলো ডিএক্সের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. কামরুল হাসান। তিনি বলেন, ডিএনএর বিবর্তন কাজে নতুন আবিষ্কার এক ধরনের এনজাইম ও অ্যান্টিবডি তৈরি করে রসায়নে এ বছরের নোবেলজয়ী ফ্রান্সেস এইচ আর্নল্ড, জর্জ পি স্মিথ ও গ্রেগরি পি উইন্টার। তাঁদের এই আবিষ্কার চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।

বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজনে ‘বিজ্ঞানে নোবেল ২০১৮’ শিরোনামে বিশেষ পাবলিক লেকচারে পাঠক ও অতিথিরা। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা
বিজ্ঞানচিন্তা আয়োজনে ‘বিজ্ঞানে নোবেল ২০১৮’ শিরোনামে বিশেষ পাবলিক লেকচারে পাঠক ও অতিথিরা। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষ, ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর। ছবি: হাসান রাজা

পাবলিক লেকচারে এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎকৌশল ও ইলেকট্রনিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার। তিনি বলেন, পদার্থবিজ্ঞানে এ বছর অন্যতম নোবেলজয়ী আর্থার অ্যাশকিন গত শতাব্দীর সত্তর দশকে অপটিক্যাল টুইজার আবিষ্কার করেন। এ অপটিক্যাল টুইজারে তিনি ব্যবহার করেন লেজার আলো। নোবেলজয়ী অন্য দুই পদার্থবিজ্ঞানী জেরার্ড মরো ও ডোনা স্টিকল্যান্ড আবিষ্কার করেন চিরপড পালস অ্যামপ্লিফিকেশন। তাঁদের এই প্রযুক্তি জীববিদ্যা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

পাবলিক লেকচারে উপস্থিত পাঠকদের নোবেলবিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন আলোচকেরা। পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন নওরীন মোস্তফা।

উল্লেখ্য, বরাবরের মতো এবারও নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে অক্টোবরে। চলতি মাসে বিজয়ীদের হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছে পুরস্কার। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সুইডেনের রাজা।