'বলে দিন কয়টা আসন জোর করে নেবেন'

মিজানুর রহমান
মিজানুর রহমান

রাজশাহীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁদের নির্বাচনী এজেন্টদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সদর (রাজশাহী–২) আসনে বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, ‘কয়টি আসন আপনারা জোর করে নেবেন, বলে দিন। আমরা সেই কয়টি আসন থেকে আমাদের লোকজন তুলে নেব। তা ছাড়া আমরা আমাদের নেতা–কর্মীদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারি না।’

এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম আবদুল কাদের বলেন, তাঁরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবেন।

গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এ সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু ছাড়াও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের প্রার্থী রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক, রাজশাহী–৪ (বাগমারা) আসনের বিএনপির প্রার্থী আবু হেনা, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনসুর রহমানসহ রাজশাহীর বিভিন্ন আসনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাকের পার্টির প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মিজানুর রহমান নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) এলাকার কয়েকটি জায়গার উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই এলাকাগুলোতে মনে হচ্ছে ‘রায়ট’ হচ্ছে। ভাঙ্চুর হচ্ছে, আগুন জ্বলছে। তিনি বলেন, তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল)। রোববার রাত থেকে অস্ত্রধারীরা তাঁর বাড়ি ঘিরে রেখেছিল। সকালে তিনি (মিনু) গিয়ে জানতে চান, তাঁরা সরকারি কোনো বাহিনীর লোক কি না। তাহলে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। তাঁরা পরিচয়পত্র দেখায়নি। তখন তিনি বলেন, তাহলে আপনারা অস্ত্র নিয়ে কোনো মানুষকে হত্যা করতে এসেছেন। এ কথা বলার পরে তাঁরা বলেন, তাঁরা সরকারি লোক। অন্য একটি কাজে এসেছেন। এরপর তিনি মোসাদ্দেক হোসেনকে বাড়ির ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার উদ্দেশে মিজানুর রহমান বলেন, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে তাদের প্রার্থী আবু সাঈদ চাঁদ কারাগারে রয়েছেন। তাই ভাইকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর মায়ের বয়স ৯৪ বছর। বাড়িতে ছোট বাচ্চাও রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে যা হওয়ার হবে। তবে সবার বাড়িতেই মা আছে, ছোট বাচ্চা আছে। বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে মাহফুজুর রহমান বলেন, তিন-চার দিন থেকে তাঁরা মাঠে নামতে গেলেই প্রতিপক্ষের বাধার শিকার হচ্ছেন। অপর দিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফরুক চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এজাজুল হক বলেন, বিএনপির কারণে তাঁদের প্রার্থীর জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এ জন্য তাঁরা প্রার্থীর জীবনের নিরাপত্তার জন্য সাতজন গানম্যান চেয়ে আবেদন করেছেন।

রাজশাহী-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী শফিকুল হক তাঁর এলাকার নেতা–কর্মীদের ওয়ারেন্ট ছাড়াই তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন।

রাজশাহী-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী আবু হেনা আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থক ও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বদলির অভিযোগ করেও ফল পাননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের পক্ষে মুসলেম উদ্দিন বলেন, বাগমারার পরিবেশ সুন্দর। বিএনপির প্রার্থী ১০ বছর এলাকায় না থাকার কারণে স্থানীয় লোকজন তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত রয়েছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী না।