দেশি পর্যবেক্ষক আরও কমতে পারে

অলংকরণ : তুলি
অলংকরণ : তুলি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষকের সংখ্যা আরও কমে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমোদন পেলেও ১৫টি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিদেশি অর্থ ছাড়ের বিষয়ে এনজিও ব্যুরোর অনাপত্তিপত্র পায়নি। এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকের পক্ষে নিজস্ব অর্থায়নে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। ফলে প্রায় ৮ হাজার পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকতে পারবে না বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় সূত্র জানায়, এবার ৮১টি প্রতিষ্ঠান ৩৪ হাজার ৬৭১ জন পর্যবেক্ষকের জন্য ইসিতে আবেদন করে। সেখান থেকে ইসি বাছাই করে ২৫ হাজার ৯২০ জন দেশি পর্যবেক্ষকের তালিকা অনুমোদন করে। তাদের মধ্যে ২২টি পর্যবেক্ষক সংস্থার মোর্চা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) ২২টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ হাজার পর্যবেক্ষক রয়েছেন।

ইডব্লিউজি সূত্র জানায়, সরকারের নিয়ম অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান বিদেশি অনুদান পেয়ে থাকে, তাদের টাকা ছাড়ের জন্য এনজিও ব্যুরো থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে হয়। একই সঙ্গে এনজিও ব্যুরোর অনাপত্তিপত্রের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করতে হয়। ইডব্লিউজির প্রতিষ্ঠানগুলোকে এবার তিনটি বিদেশি সংস্থা অর্থায়ন করছে। গত মঙ্গলবার এনজিও ব্যুরো ইডব্লিউজির সাতটি প্রতিষ্ঠানকে অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। এগুলো হলো জানিপপ, সলিডারিটি, উত্তরণ, এসিডি, আইইডি, জিইউকে ও বাঁচতে শেখা। বাকি ১৫টি প্রতিষ্ঠান এখনো অনাপত্তিপত্র পায়নি। আর শেষ মুহূর্তে অনাপত্তিপত্র পেলেও তাদের পক্ষে পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যবেক্ষণকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।

ইডব্লিউজির চেয়ারপারসন আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, এখন অনাপত্তিপত্র বা টাকা ছাড় পেলেও পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় নেই। যে কারণে পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এনজিও ব্যুরোর অনুমোদন না পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নিজস্ব কিছু তহবিল এবং প্রশিক্ষিত কিছু জনবল আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা স্বল্প পরিসরে কিছু এলাকায় পর্যবেক্ষণ চালাবেন। তবে সেই সংখ্যা কোনোভাবেই এক হাজারের বেশি হবে না।

এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ, লাইট হাউস, খান ফাউন্ডেশন ও ডেমক্রেসিওয়াচ এবং বিএনপি জানিপপকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি না দেওয়ার আবেদন করেছে। এ ছাড়া জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, নবলোক, কোস্ট ট্রাস্ট, শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি ও নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (এনআরডিএস) বিষয়েও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগ।

ইডব্লিউজির চেয়ারপারসন আবদুল আউয়াল বলেন, ‘অভিযোগটি আমাদের জন্য বিব্রতকর ও আপত্তিকর। কারণ, এই তালিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদের প্রায় সবাই বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’