লাঙ্গল ও নৌকার জয়ে বাধা দুই নারী 'বিদ্রোহী' প্রার্থী

ফেরদৌস আরা খান  ও   তাহমিনা জাহান
ফেরদৌস আরা খান ও তাহমিনা জাহান

বিএনপিশূন্য বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের ‘ঘরের বউ’ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা তাঁর জয়ের আশা করছেন।

বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত আসনটি আইনি মারপ্যাঁচে প্রথমে ধানের শীষের প্রার্থীশূন্য হয়। এই আসনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মহাজোটের লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জাপার সাংসদ মুহাম্মদ আলতাফ আলী। তা ছাড়া ডাব প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ফেরদৌস আরা খান। তিনি গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ আজম খানের স্ত্রী। বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রফি নেওয়াজ খানের শাশুড়ি।

গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ আজম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আলতাফ আলী আওয়ামী লীগের সমর্থনে ২০১৪ সালে সাংসদ হলেও বিগত পাঁচ বছর তিনি আমাদের দলের নেতা-কর্মীর কোনো খোঁজ নেননি। এ কারণে এবার আমি নিজেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। কিন্তু মহাজোট থেকে জাপার আলতাফকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এই প্রেক্ষাপটে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডাকা হয়। সেখানে সর্বসম্মতিতে আমার স্ত্রী ফেরদৌস আরাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত হয়। আমার স্ত্রীর দলীয় কোনো পদ নেই। দল থেকে ব্যবস্থা গ্রহণেরও কোনো সুযোগ নেই। এখন দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার স্ত্রীকেই সমর্থন দিয়েছেন। আদালত ধানের শীষের প্রার্থিতা বাতিল করে দেওয়ায় আমার স্ত্রীর বিজয় অনেকটা নিশ্চিত। কারণ, বর্তমান সাংসদের সঙ্গে কেউ নেই। বিজয়ী হওয়ার পর আমার স্ত্রী আওয়ামী লীগে যোগদান করবেন। বিষয়টি ইতিমধ্যেই দলের হাইকমান্ডকে অবহিত করেছি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আরা খান গতকাল মঙ্গলবার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গাবতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাব মার্কার প্রচারণা চালান। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

জানতে চাইলে ফেরদৌস আরা খান বলেন, তাঁর স্বামী এ এইচ আজম খান, মেয়েজামাই রফি নেওয়াজ খানসহ গোটা পরিবার আওয়ামী ঘরানার হলেও তিনি কোনো দলের সমর্থক নন। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তাঁকে দলমত-নির্বিশেষে সবাই সমর্থন দিচ্ছেন। নতুন মুখ হওয়ায় নারী ভোটারের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন।

নৌকার পথের কাঁটা সিংহ

বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে এবার মহাজোট-সমর্থিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলটির সাংসদ হাবিবর রহমান। তবে এখানে শেরপুর শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিনা জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। সিংহ প্রতীক নিয়ে তিনি সরব ভোটের মাঠে। নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকাজুড়ে নৌকার পাশাপাশি সিংহ প্রতীকের পোস্টার ছেয়ে গেছে।

গত সোমবার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী বটতলা বাজারের ২০ জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সাংসদ হাবিবর-বিরোধী একটি অংশ সিংহ প্রতীকের পক্ষে রয়েছে। ব্যালটে সিংহ প্রতীক না থাকলে এই ভোট পড়ত নৌকায়।