ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা বাড়িতে মহাজোট সভা-সমাবেশে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে নাসিরনগর উপজেলায় মিছিল করেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। গতকাল দুপুরে বুড়িশ্বর গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে নাসিরনগর উপজেলায় মিছিল করেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। গতকাল দুপুরে বুড়িশ্বর গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনের পাঁচটিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা গতকাল বৃহস্পতিবার সভা-সমাবেশে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। অপর দিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বেশির ভাগই বাড়ি থেকেই খুব একটা বের হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ ফরহাদ হোসেন। গতকাল বিকেলে তিনি নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে নির্বাচনী জনসমাবেশ হয়। এতে সব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্য অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন।

এ আসনে দলটির প্রার্থী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান। গতকাল তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন। এসব স্থানে মিছিলও করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান বলেন, পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। মিছিল, সভা ও জনসভায় বাধা দিয়েছে। কিন্তু নেতা-কর্মীরা ভয় পান না। ভোট থেকে একপা পেছাবেন না তাঁরা। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেই। এখানে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়েছেন জাতীয় পার্টির রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি গতকাল বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালান। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি গতকাল বলেন, ‘দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলার তাপবিদ্যুৎ এলাকায় গণসংযোগ করেছি। কিন্তু পুলিশের অবস্থানের কারণে আশুগঞ্জ সার কারখানা এলাকায় গণসংযোগে যেতে পারিনি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি গতকাল সকালে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের কার্যালয়, ভাদুঘর মাদ্রাসা ও রামারাইল ইউনিয়নের লায়ন ফিরোজুল রহমান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের মাঠে জনসভা করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত যোগ দেন। বিকেলে সাংসদ জেলা শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে নির্বাচনী জনসভা করেন।

এ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বের হননি। বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ করেছে। দিনভর বাসায় নির্বাচনী এজেন্টদের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা এবাদুল করিম। গতকাল তিনি শিবপুরের মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন। এখানে অন্য আসনের তুলনায় অন্য দলের প্রার্থীরাও প্রচারণা চালাতে পারেন। তবে গতকাল বিএনপির প্রার্থী কাজী নাজমুল হোসেন নির্বাচনী প্রচারণায় বের হননি। তিনি বলেন, আগামীকাল (আজ) সকাল পর্যন্ত প্রচারণা চালানোর সময় আছে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর)

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাংসদ এ বি তাজুল ইসলাম। গতকাল বিকেলে তিনি মাওলাগঞ্জ বাজারের মাঠে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন। এ আসনে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজিপি) আবদুল খালেক বিএনপির প্রার্থী। এখানে বিএনপির অবস্থা খুব শোচনীয়। প্রার্থীসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। মামলার ভয়ে অনেক নেতা-কর্মী এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন। যাঁরা আছেন, অনেকে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। গতকালও আবদুল খালেক বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি।

বিএনপির প্রার্থী আবদুল খালেক বলেন, ‘বাসা থেকেই বের হতে পারছি না। যেখানেই নেতা-কর্মীরা যান, সেখানেই পুলিশ। এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা বের হওয়ার সাহসই পাচ্ছেন না। কোনো পরিবেশ নেই এখানে।’