শেষ মুহূর্তে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, সুবিধায় আ.লীগ

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে ব্যাপক প্রচারণা করে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সুবিধায় আছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রচারণার শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিলেন সরব।

এ আসনে আওয়ামী লীগের তুলনায় প্রচারণায় পিছিয়ে আছে বিএনপি। কারণ এ আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হয় গত রোববার বিকেলে।

হালুয়াঘাট উপজেলা সদর ও গোবড়াকুড়া স্থলবন্দর এলাকায় গত মঙ্গলবার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, বিএনপির প্রার্থী নিয়ে জটিলতার কারণে এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রচারণায় অনেক এগিয়ে। নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর হালুয়াঘাটের মানুষ শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা দেখেছেন। রোববার হঠাৎ করেই বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার খবর জানতে পারেন সাধারণ ভোটাররা।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশে রোববার বিকেলে ধানের শীষ প্রতীক পান সাবেক সাংসদ আফজাল এইচ খান। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। এর আগে এ আসনে হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগরকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। শেষ মুহূর্তে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন করে দেওয়া হয় আফজাল এইচ খানকে। আফজাল এইচ খান দলীয় মনোনয়নের চিঠি সময়মতো রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছাতে না পারায় তা গ্রহণ করা হয়নি। রিটার্নি কর্মকর্তা আলী আজগরকে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ বরাদ্দ দেন। পরে ঋণখেলাপির কারণে আলী আজগরের মনোনয়ন স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরবর্তীকালে আলী আজগর ও আফজাল এইচ খান দুজনই হাইকোর্টে নিজেদের প্রার্থিতা পেতে আপিল করলে রোববার আফজাল এইচ খান দলীয় প্রতীক পেয়ে চূড়ান্ত প্রার্থী হন।

বিএনপি সূত্রে আরও জানা যায়, আফজাল এইচ খান ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার দিন থেকেই প্রচারণা শুরু করেন। সময় কমে যাওয়ায় নির্বাচনী এলাকার দুটি উপজেলায় ভোটারদের কাছে দ্রুত পৌঁছানোর চেষ্টা করেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি ধোবাউড়া উপজেলা সদর ও গোয়াতলা ইউনিয়নে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ করেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ জুয়েল আরেং প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার চষে বেড়ান। তাঁর পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীরা জোট বেঁধে প্রচারণায় নামেন। শুরুর দিকে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় অনেকটা ফাঁকা মাঠেই নির্বাচনী প্রচারণা সেরে নেয় আওয়ামী লীগ। শেষ পর্যন্ত বিএনপি প্রচারণা শুরু করলেও তারা খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না বলে আওয়ামী লীগের ধারণা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, সাবেক সাংসদ ও সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত প্রমোদ মানকিনের সময় আসনটি আওয়ামী লীগের ‘ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিতি পায়। কাজেই নির্বাচনের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে ছিল। প্রমোদ মানকিনের ছেলে জুয়েল আরেং মনোনয়ন পাওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

জানতে চাইলে আফজাল এইচ খান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘প্রচারণার সময় কম পাওয়া গেলেও আমার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ভোটাররা জেনেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

গতকাল দুপুরে জুয়েল আরেং মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, প্রচারণার সময় জনগণের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। জয়ের ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী।