নববর্ষ ২০১৯ উদ্যাপনে ডিএমপির নির্দেশনা

খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ২০১৯ উদ্‌যাপনে আজ সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদারে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি জানিয়েছে, এদিন মধ্যরাতে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্‌যাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকে। এ সময় ওই ব্যক্তিরা পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা ও দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এসব নৈতিক মূল্যবোধপরিপন্থী কর্মকাণ্ড বা বেআইনি কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।

ডিএমপি নির্দেশনা অনুসারে নববর্ষ উদ্‌যাপনকালে ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তা, ভবনের ছাদ ও প্রকাশ্যে স্থানে কোনো ধরনের জমায়েত, সমাবেশ ও উৎসব করা যাবে না। নববর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না। নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কোথাও কোনো ধরনের আতশবাজি-পটকা ফোটানো যাবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ছয়টার পরে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত এবং শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

নির্দেশনা অনুসারে, গুলশান এলাকায় প্রবেশের জন্য কাকলি ক্রসিং এবং আমতলী ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। তবে নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে এ দুটি ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। একইভাবে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যাঁরা বসবাস করেন না, তাঁদের এসব এলাকায় যেতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত ব্যক্তিদের ৩১ তারিখ রাত আটটার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় ফিরতে বলা হয়েছে।

রাত আটটার পর ঢাকায় কোনো বার খোলা রাখা যাবে না। নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন ভোর ছয়টা পর্যন্ত ঢাকার আবাসিক হোটেল, রেস্তোরাঁ, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্রাফিক ডাইভারশন ও পরামর্শ
গুলশান, বনানী ও বারিধারায় প্রবেশের সব রাস্তা রাত ১০টা থেকে বন্ধ রাখা হবে। তবে ওই এলাকায় বসবাসরত ব্যক্তিদের প্রবেশের জন্য কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলি ক্রসিং) এবং আমতলী ক্রসিং (মহাখালী) খোলা রাখা হবে। সে ক্ষেত্রে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় বসবাসরত নাগরিকদের রাত ১০টার মধ্যে ওই এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। রাত ১০টা থেকে গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যানবাড়ি ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে না, তবে ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে।

একইভাবে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরদিন সকাল ছয়টা পর্যন্ত শুধু শাহবাগ ক্রসিং এবং নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। পলাশী ক্রসিং, ভাস্কর্য ক্রসিং, বকশীবাজার ক্রসিং, রমনা চত্বর ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং এবং শহীদুল্লাহ হল ক্রসিং দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সব ধরনের গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। হাইকোর্ট পয়েন্ট থেকে আসা সব গাড়ি দোয়েল চত্বরের বাঁয়ে মোড় নিয়ে শহীদুল্লাহ হল হয়ে চানখারপুল ক্রসিং দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবে। বেপরোয়া, মদ্যপ ও বিপজ্জনক অবস্থায় কাউকে গাড়ি না চালাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

জরুরি প্রয়োজনে ফোন
ডিসি ট্রাফিক (নর্থ): ০১৭১৩৩৭৩২২৫, এডিসি ট্রাফিক (নর্থ): ০১৭১৩৩৭৩২২৬, এসি ট্রাফিক (গুলশান): ০১৭১৩৩৯৮৪৯৭, এসি ট্রাফিক (উত্তরা): ০১৭১৩৩৯৮৪৯৮, ডিসি ট্রাফিক (সাউথ): ০১৭১৩৩৭৩২২৩, এডিসি ট্রাফিক (সাউথ): ০১৭১৩৩৭৩২২৪, ডিসি (গুলশান): ০১৭১৩৩৭৩১৬৬ ও ডিসি (উত্তরা): ০১৭১৩৩৭৩১৫৬।