বিএনপি কার্যালয়ে কয়েক নেতার 'অলস আড্ডা'

পল্টনে বিএনপি অফিসে রুহুল কবির রিজভী। ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
পল্টনে বিএনপি অফিসে রুহুল কবির রিজভী। ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ সোমবার বেলা ২টায় দেখা গেল, চায়ের দোকানগুলো বন্ধ। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি। নেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যও।

কার্যালয়ের নিচতলার কক্ষটি খোলা। প্রধান ফটক খুলে বসে আছেন এক নিরাপত্তারক্ষী। ভবনের তিন তলায় পাওয়া গেল, দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে। তাঁর সামনে সাতজন নেতা বসে আড্ডা দিচ্ছেন। এর পাশের কক্ষে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন আরও আটজন নেতা । সেখানে বিএনপির এক নেতা বললেন, ‘রিজভী ভাই, হিরো আলমতো হিট। তিনি ভোট বর্জন করেছেন। তাঁকে মারধর করা হয়েছে।’

মুচকি হাসি দিয়ে রিজভী বললেন, ‘হিরো আলম।’ এরপর সেখানে হিরো আলমকে নিয়েই কিছুক্ষণ কথা বলেন নেতারা।

হিরো আলম বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। যদিও মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে নির্বাচনের মাঝপথে হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভোট বর্জন করছেন।

নেতা কর্মীদের সঙ্গে গল্পের এক ফাঁকে রিজভী বললেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচনের বিষয়ে আজই কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আজ আর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলব না।’ আড্ডায় অংশ নেওয়া বিএনপির নেতাদের কথায় উঠে আসে সাম্প্রতিক রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ। বিএনপির কোন নেতা কত ভোট পেয়েছেন তা নিয়ে আলোচনা হয়।

তবে সেখানে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত বলছিলেন, বিএনপি নেতারা মোটেও হতাশ নয়। সেখানে উপস্থিত আরেক নেতা মীর নেওয়াজ আলীও বললেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনের চিত্র। ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনের চিত্র। ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

বেলা ২টার পর রিজভীর সঙ্গে যখন নেতাকর্মীরা গল্প করছিলেন তখন অফিসের নিচতলায় গিয়ে দেখা গেল, জনা চারেক লোক সেখানে গল্প করছেন। তাঁদের আলোচনাও ভোট নিয়ে। ফিরে আসার সময় কাকরাইল মোড়ে দেখা গেল, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা রাস্তায় টাঙানো নির্বাচনী পোস্টার ভ্যানে তুলছেন। অবশ্য তখনো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পোস্টার ঝুলছিল ওই সড়কে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে দলটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে; একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে। এতে ২৫৯টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা) পেয়েছে ২০টি আসন। বিএনপি পেয়েছে ৫টি আসন, ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরাম পেয়েছে ২টি আসন। ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি আসন পেয়েছে। জাসদ পেয়েছে ২টি আসন। বিকল্পধারা ২টি আসন পেয়েছে। তরিকত ফেডারেশন ও জেপি পেয়েছে ১টি করে আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৩টি আসন। জোটগতভাবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮ আসন। আর তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে ৭টি আসন।