সুনসান বিএনপির কার্যালয়

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন গতকাল সোমবার দিনভর নিরুত্তাপ ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। নয়াপল্টনের এই কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের আনাগোনা ছিল না। সংবাদ সম্মেলনও করেননি নিয়মিত গণমাধ্যমের সামনে আসা দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। নির্বাচনের ফলে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখে নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়মুখী হননি।

বেসরকারি ফলাফলে ক্ষমতাসীন দল বড় জয় পেয়েছে। মাত্র পাঁচটি আসনে জয়ী হয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বিএনপি। ঢাকায় কোনো আসন পায়নি দলটি। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর রোববার রাতেই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট।

সাধারণত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আসা–যাওয়া থাকে। তফসিল ঘোষণার পর প্রায় প্রতিদিনই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে নেতাদের গাড়ির জটলা লেগেই থাকত। গত এক মাসে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলন করেছেন রুহুল কবির রিজভী। এই সংবাদ সম্মেলন ঘিরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি থাকত সব সময়। কিন্তু নির্বাচনের পর এই চিত্র বদলে গেছে। গতকাল অনেকটাই সুনসান ছিল দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়।

গতকাল সকাল ১০টায় নয়াপল্টন কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কেবল রুহুল কবির রিজভী ও কার্যালয়ের কয়েকজন স্টাফ অবস্থান করছেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ছাড়া কোনো নেতা-কর্মী কার্যালয়ে আসেননি।

এদিকে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের দিন পর্যন্ত নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টানা অবস্থান থাকলেও গতকাল কাউকে দেখা যায়নি।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নয়াপল্টন কার্যালয়ে আসেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তার সঙ্গে বিএনপির এই দুই নেতা ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন। তবে বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে বিএনপি নেতারা কোনো কথা বলেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে অংশ নেওয়া এক নেতা বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির পর্যবেক্ষণ জানতে চেয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের ওই কর্মকর্তা।

এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী, রমেশ দত্তসহ আরও কয়েকজন কার্যালয়ে আসেন। তাঁরা কার্যালয়ে অবস্থানরত রিজভীর সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে আলাপ–আলোচনা করেন। তাঁরাও দুপুরের পর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এরপর বিকেল পর্যন্ত আর কোনো নেতাকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।

নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আজই (গতকাল বিকেলে) এ ব্যাপারে কথা বলবেন। এ ব্যাপারে আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলব না।’

তবে নির্বাচন নিয়ে তাঁর পাশে বসা নেতাদের ভাষ্য, ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা মোটেও হতাশ নন। ৯০–এর দশকে এর চেয়ে কঠিন সময় তাঁরা দেখেছেন। এ সময় রিজভীকে দল গোছাতে মনোযোগী হওয়ারও পরামর্শ দেন এক নেতা।