ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ ৪ জানুয়ারি। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

ছাত্রলীগের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বায়ান্নর ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, সাতান্নর শিক্ষক ধর্মঘট, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

স্বাধীন বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সংগ্রামী ভূমিকা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য।

তবে সময়ের পরিক্রমায় ছাত্রলীগ একাধিক ধারায় বিভক্ত হয়। নিজেদের মধ্যে দলাদলি, অন্তর্কোন্দল, হামলা-মারামারিসহ নানা কারণে ছাত্রলীগের সমালোচনাও আছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ চার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। তবে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব কর্মসূচি স্থগিত করেছে ছাত্রলীগ।

জাসদ সমর্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগও দিবসটি উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তারা আজ বেলা ১১টায় কলা ভবনের সামনে বটতলায় সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করবে। জাসদ ছাত্রলীগের আরেকটি অংশ সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে। জাসদের সর্বশেষ কাউন্সিলে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পর ছাত্রলীগও দুটি আলাদা কমিটি করে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি স্থগিত
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রলীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন–পরবর্তী সব কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার বাদ জুমা সব সাংগঠনিক ইউনিটকে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার সকালে শুধু জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ ছাড়া পরবর্তী সব কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ আশরাফ থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অসুস্থতার কারণে তিনি গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদ থেকে ছুটি নেন। দেশে না থেকেও সৈয়দ আশরাফ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীকে জয়ী হন।