ব্যবসায়ীদের গণপিটুনিতে একজন নিহত

দোকানপাট বন্ধ করে মহিউদ্দিনের দোকান ঘেরাও করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। রেলওয়ে বাজার, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম, ৭ জানুয়ারি। ছবি: জুয়েল শীল
দোকানপাট বন্ধ করে মহিউদ্দিনের দোকান ঘেরাও করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। রেলওয়ে বাজার, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম, ৭ জানুয়ারি। ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারে ব্যবসায়ীদের গণপিটুনিতে আজ সোমবার সকালে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার আরেক সহযোগী।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. মহিউদ্দিন সোহেল। তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটিতেও উপশিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ছিলেন। রেলওয়েতে পারিবারিক ঠিকাদারি ব্যবসাও রয়েছে তাদের। আহত রাসেল মহিউদ্দিনের সহযোগী।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল রোববার রাতে পাহাড়তলী বাজারের এক মরিচ ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে যায় মহিউদ্দিন সোহেলের লোকজন। বাজারের পাশে একটি ঘরে তাকে বেঁধে রাখা হয়। পরে টাকা দিয়ে মুক্ত হন তিনি। আজ সোমবার সকাল নয়টার দিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে মহিউদ্দিনের ঘরে যান ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য ওসমান খান। কিন্তু প্রতিবাদ জানাতেই তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেন মহিউদ্দিন। ওসমানকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা দোকানপাট বন্ধ করে মহিউদ্দিনের আস্তানা ঘেরাও করেন। কিন্তু ফটক বন্ধ থাকায় কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। একপর্যায়ে কে বা কারা বাইরে থেকে মহিউদ্দিনের ঘরে আগুন দিয়ে দেয়। এ সময় মহিউদ্দিন বেরিয়ে এলে তাঁর ওপর লোকজন চড়াও হয়। বেদম পিটুনি দিয়ে তাঁকে গুরুতর জখম করে লোকজন। এ সময় তাঁর আরেক সহযোগীও আহত হন।

ঘটনার পর ডবলমুরিং থানার পুলিশ এসে মহিউদ্দিন সোহেল ও তার সহযোগীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মহিউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

দুপুর সাড়ে ১২টায় ঘটনাস্থলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ মহিউদ্দিন সোহেলকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তাঁর মৃত্যু হয়। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছে, চাঁদাবাজির প্রতিবাদে এ ঘটনা ঘটেছে। পণ্যবাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় হতো। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।

ঘটনার পর পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে আহ্বায়ক কমিটির কাউকে পাওয়া যায়নি। সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নুরুন নবী তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পণ্য পরিবহনের গাড়ি ও স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদাবাজি ঘটনা ঘটছে কয়েক মাস ধরে। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে গণপিটুনি দেয়।