নাম ধরে ডাকতে না করায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা

নিচের ক্লাসের এক ছাত্রকে নাম ধরে ডাকতে নিষেধ করার জের ধরে মেহেদি হাসান (১৬) নামের এক এসএসসি (ভকেশনাল) পরীক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এখলাস উদ্দিন (২৬) নামে এক শিক্ষকও আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার আউলিয়াপাড়া এলাকার আব্দুল গণি কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মেহেদি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি আতকাপাড়া গ্রামের ট্রাকচালক মো. কাঞ্চন মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ তারেক নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মূল অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন ও তার অপর সহযোগী রিয়েল পলাতক রয়েছে।

নিহত এসএসসি (ভকেশনাল) পরীক্ষার্থী মেহেদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহপাঠী নূর মোহাম্মদ জানায়, দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন কয়েক দিন আগে মেহেদি হাসানকে নাম ধরে ডাক দেয়। এ সময় মেহেদি সাব্বিরকে নাম ধরে ডাকতে নিষেধ করে। এ নিয়ে দুজনের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

হামলায় আহত বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক এখলাস উদ্দিন জানান, মেহেদি হাসান বিদ্যালয়ে এসে তাঁর কাছে প্রাইভেট পড়ত। সকাল ৮টা থেকে তাঁদের ব্যাচ শুরু হয়। সকাল ৭টার ব্যাচ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই মেহেদি এবং অন্যরা অপেক্ষা করছিল। এ সময় বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন তাঁর এক সহযোগীকে নিয়ে সেখানে গিয়ে মেহেদিকে একটু আড়ালে ডেকে নেয়। বিষয়টি জানতে তিনি কাছাকাছি গিয়ে দেখেন, সাব্বির, তাঁর দুই সহযোগী রিয়েল ও তারেক এবং মেহেদির মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছে। তাঁদের নিবৃত্ত করতে তিনি এগিয়ে যাওয়ার আগেই মেহেদির বুকে সাব্বির ধারালো চাকু ঢুকিয়ে দেয়। তিনি মেহেদিকে রক্ষা করতে চাইলে তাঁকেও চাকু দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায় সাব্বির এবং তার দুই সহযোগী রিয়েল ও তারেক। চাকুর আঘাতে তাঁর নাকের নিচের অনেকটা অংশ কেটে যায়। পরে সহপাঠি ও অন্যরা মিলে মেহেদিকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাব্বির এবং তার দুই সহযোগী রিয়েল ও তারেককে ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশের অভিযানে দুপুর ১২টার দিকে তারেক আটক হয়।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে তারেক নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।