টিআইবির প্রতিবেদনে মহা সত্য প্রকাশ হয়েছে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আঁতে ঘা লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, টিআইবির প্রতিবেদনে মহা সত্য প্রকাশ হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রক্রিয়া পর্যালোচনা শীর্ষক প্রাথমিক প্রতিবেদন গত মঙ্গলবার প্রকাশ করে টিআইবি। সরকারি দলের একক সক্রিয়তা, বিরোধীদলীয় প্রার্থী ও কর্মীদের নামে মামলা-গ্রেপ্তার-হয়রানি, প্রচারে বাধা, সহিংসতা, রাতে ব্যালটে সিল মারা, আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা, পোলিং এজেন্টদের বাধা ও বের করে দেওয়া, প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর নীরবতা, জাল ভোট, বুথ দখল, ভোটারদের বাধা বা তাড়িয়ে দেওয়া, নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করা—এবারের সংসদ নির্বাচন নিয়ে এসব অভিযোগ উঠে আসে টিআইবির গবেষণায়। সংগঠনটি এসব অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।

সরকারি দলের পক্ষ থেকে টিআইবির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘টিআইবি অলীক গল্প সাজিয়েছে।’ তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ টিআইবির প্রতিবেদনকে ‘একপেশে, মনগড়া ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য যথেষ্ট বলে’ মন্তব্য করেছেন।

টিআইবির এই প্রতিবেদন গতকাল বুধবার পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন ভিত্তিহীন

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আজ দেওয়া বিবৃতিতে দাবি করেন, ‘টিআইবির রিপোর্টে ভোট ডাকাতির মহা সত্য প্রকাশ হওয়াতে সরকারের মন্ত্রীরা ও নির্বাচন কমিশন মুখ লুকাতে পারছে না। সে জন্য আর্তচিৎকার করে সত্য লুকানোর চেষ্টা করলেও কোনো লাভ নেই। মানুষ যা জানার নির্বাচনের আগের দিন রাত থেকেই জেনেছে।’

রিজভীর ভাষ্য, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিভিন্ন সংগঠন এই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্বের নানা গণতান্ত্রিক দেশ বলেছে, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তদন্ত দাবি করেছে।

রিজভী বলেন, ক্ষমতা চিরদিনের জন্য আঁকড়ে ধরে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ভোটারদের ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়েও কথা বলেন। তাঁর অভিযোগ করেন, সাজানো ও অসত্য মামলায় খালেদা জিয়াকে ঘনঘন আদালতে উপস্থিত করা হচ্ছে। সরকারের কারসাজিতেই তাঁর জীবন গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে দাবি জানান রিজভী।

আগামী শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দলীয় কর্মসূচির কথা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন রিজভী।