রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে জানুয়ারিতেই নিউইয়র্কে মামলা: অর্থমন্ত্রী

আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি
আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশের চুরি হওয়া রিজার্ভের টাকা উদ্ধারে চলতি মাসেই নিউইয়র্কের আদালতে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মামলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। এ মাসের ভেতরই মামলা হবে। এই মামলা দেখভালের জন্য বাংলাদেশের একজন আইনজীবী রয়েছেন। ঠিক তেমনিভাবে আমেরিকায়ও একজন আইনজীবী আছেন। তাঁরা যৌথভাবে সময় নির্ধারণ করে এ মামলা দায়ের করবেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘কতজনকে আসামি করব, কতজনকে বাদী করব—এগুলো দুই দেশের আইনজীবীরা বসে ঠিক করবেন।’

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হলেও তা প্রকাশ পায় এক মাস পর মার্চে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮১০ কোটি টাকা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়। চুরি হয়ে যাওয়া ৮১০ কোটি টাকার মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইন থেকে ২৭৩ কোটি টাকা ফেরত আনা গেলেও বাকি ৫৩৭ কোটি টাকা উদ্ধারের বিষয়ে অগ্রগতি নেই। এ নিয়ে ওই সময় যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং অর্থ ফেরত আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। নৈতিক দায় নিয়ে তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান পদত্যাগও করেছিলেন। রহস্য উদঘাটনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে যে কমিটি গঠিত হয়, তারা যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। কিন্তু সরকার সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ অর্থ পাচারের আট দফা অভিযোগে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত। প্রতিটি অভিযোগের জন্য মায়াকে চার থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সম্প্রতি আদালত এই দণ্ডাদেশ দেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

এই চুরিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার চুরির ঘটনা বলে মনে করা হয়। এ চুরিতে প্রথম সাজা পেলেন মায়া। কারাদণ্ডের পাশাপাশি মায়াকে ১০৩ মিলিয়ন ডলারের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।